গাইবান্ধায় সাঁওতাল নারী ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন

 


এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাইশ্লোগানকে সামনে রেখে সামাজিক-সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য মর্যাদা রক্ষায় সাঁওতাল নারী ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) গাইবান্ধা জেলা পরিষদের সহযোগিতায় আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ জনউদ্যোগের আয়োজনে জেলার কাটাবাড়ী ইউনিয়নের তালতলা মাঠে তারুণ্যের উৎসব উদযাপিত হয়। বর্ণিল এই আয়োজনে নারীদের ফুটবল প্রতিযোগিতা সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে সাঁওতালরা তাদের সংস্কৃতি তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের সদর উপজেলার আহবায়ক গোলাম রব্বানী মুসা।

প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রউফ তালুকদার, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতান, কাটাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জোবায়ের হাসান শফিক মাহমুদ, পরিবেশ আন্দোলন গাইবান্ধার আহ্বায়ক ওয়াজিউর রহমান রাফেল, সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাসকে, জনউদ্যোগ গাইবান্ধার সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, ফুটবল কোচ রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, সাঁওতালসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর খেলাধুলা, সংস্কৃতি বিকাশে সরকারসহ বিভিন্ন সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে। অন্যান্য জনগোষ্ঠীর অপেক্ষায় সাঁওতাল নারীরা আরও প্রান্তিক অবস্থানে রয়েছেন। মূল স্রোতধারায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে ধরনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়।

সাঁওতাল নারীদের ফুটবল খেলায় মাদার তেরেসা ফুটবল একাডেমি পাল্লো কিশোরী ক্লাব অংশ নেয়। খেলায় মাদার তেরেসা ফুটবল একাডেমি - গোলে জয়লাভ করে। খেলা পরিচালনায় ছিলেন এম..এইচ মানিক।

 

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সাথে সমতলের আদিবাসী নেতাদের বৈঠক

 


স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের সাথে বৈঠক করেছেন সমতলের আদিবাসী নেতারা। আজ ২৬ জানুয়ারি ২০২৫ সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটে বৈঠক হয়।

স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক . তোফায়েল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিশনের সদস্য এড. আব্দুর রহমান, ইলিরা দেওয়ান মাশহুদা খাতুন শেফালী উপস্থিত ছিলেন।

সমতল আদিবাসীদের পক্ষেসমতল আদিবাসী অধিকার আন্দোলনএর আহ্বায়ক উজ্জ্বল আজিম, সদস্য সচিব রিপন চন্দ্র বানাই, সদস্য হেলানা তালাং, টনি চিরান, অলিক মৃ, আন্তনী রেমা, বিভূতি ভূষণ মাহাতো, অলি কুজুর প্রমুখ প্রতিনিধিত্ব করেন।

বৈঠকে আদিবাসী নেতারা স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে (জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন) আদিবাসীদের জন্য আলাদা আসন সংরক্ষণ, আদিবাসী বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটি (ভূমি ব্যবস্থাপনা, জলাশয়, বন ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা) ও নির্বাচনকালীন সময়ে আদিবাসীদের নিরাপত্তা প্রদানের বিষয়ে আলোচনা করেন।

সমতল আদিবাসী অধিকার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ সমতলের আদিবাসীদের ঐতিহ্যগত ভূমি ব্যবস্থাপনা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের (যেমন- গারোদের নকমা প্রথা, হাজংদের গাওবুড়া, সাঁওতালদের মানঝি/পরগানা, পঞ্চায়েত প্রথা ইত্যাদি)  স্বীকৃতি, ক্ষমতায়ন, ভাতা প্রদান ও পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দের সুপারিশ করেন।

সমতল আদিবাসী অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক উজ্জ্বল আজিম বলেন, এদেশে ৫০টির বেশি আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর ৪০ লক্ষাধিক মানুষ রয়েছে। এর মধ্যে ৩৯টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বসবাস সমতলের বিভিন্ন অঞ্চলে, যা মোট আদিবাসী জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ।

তিনি আরও বলেন, “স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়ে গেলেও সমতলের আদিবাসীদের অধিকার এবং জীবনমান উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্র তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরি করেনি।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মত সমতলের আদিবাসীদের অধিকার এবং জীবনমান উন্নয়নের জন্য পৃথক মন্ত্রণালয় ভূমি কমিশন গঠন জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

‘বরেন্দ্রভূমিতে বাঙালির আগে আদিবাসীরা বসবাস শুরু করেছেন’

 


বরেন্দ্রভূমিতে বাঙালির চেয়ে আপনারাই (আদিবাসীরা) অনেক আগে থেকেই বসবাস শুরু করেছেন। এই ভূমিতে আপনাদের অধিকার সবার আগে। ৭১ সালে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছি এই জন্যই যে আমরা আমাদের নিজেদের জাতিসত্তা ভাষা যেন নিজেরাই টিকে রাখতে পারি। তাহলে আমরা কেন অন্যের ভাষা কেড়ে নেব।

রাজশাহীর গোদাগাড়ীর চৈতন্যপুর গ্রামে আজ শনিবার আগামীকাল রোববার দুই দিনব্যাপী সমতল পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সম্প্রীতি সমারোহ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে রাজোয়াড় জাতিগোষ্ঠীর আলপনাচিত্র প্রদর্শন ১৩ জনগোষ্ঠীর নৃত্য-গীত নাটক অনুষ্ঠিত হবে।

সৈয়দ জামিল আহমেদ বলেন, ‘সংস্কৃতি কেবল কীভাবে আমরা হাঁটি-খাই-কথা বলি সেটাই নয়। সংস্কৃতি হচ্ছে আমাদের নাচগান এবং ছবি আঁকাও। এর ভেতর থেকে জীবনকে যাপন করে দেখি জীবন কেন গুরুত্বপূর্ণ। ভাষা মানুষকে তার জীবনের উপলব্ধি প্রকাশ করতে সাহায্য করে। একটা ভাষা হারিয়ে যাওয়া মানেই একটা উপলব্ধিও হারিয়ে যাওয়া।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি সৈয়দ জামিল আহমেদ ছাড়াও রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, রাজশাহীর পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বিমল চন্দ্র রাজোয়াড়, অনগ্রসর সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক রাজকুমার শাওন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার বলেন, ‘একা একা ভালো থাকা যায় না। সবাই মিলে ভালো থাকতে হয়। এই যে আমরা ভালো আছি, এই ভালো থাকাটা ধরে রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে রাজকুমার শাওন আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানান। বিমল চন্দ্র রাজোয়াড় বলেন, আদিবাসীদের প্রধান সমস্যা জমি। জমি তাঁদের বেহাত হয়ে যায়।

আলোচনা শেষে আদিবাসী শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

© all rights reserved - Janajatir Kantho