এতে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও ভাষা গবেষক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর সিরাজ উদ দৌল্লাহ, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আনন্দ বিকাশ চাকমা, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক জেসী ডেইজি মারাক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক শাং থুই প্রু ও ইংরেজি প্রভাষক নৈরঞ্জনা চাকমা।
রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক পহেলা চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি সজীব তালুকদার।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, "আদিবাসী শিশুদের প্রথমে মাতৃভাষা নিয়ে পাঠদান করার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। আদিবাসীদের মাতৃভাষা তখনই টিকে থাকবে যখন আমাদের প্রজন্মান্তরে সেটি যথাযথ ব্যবহারের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। কোন ভাষায় কথা বলার মানুষ একজন মাত্র থাকলেও সেটাকে অন্যান্য ভাষার মত সমান মর্যাদা দিতে হবে। বাংলাদেশের সংকটাপন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতিকে পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারিভাবে টেকসই কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার।"
প্রফেসর ড. সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের পাহাড় ও সমতলে আদিবাসীদের ভাষা-সংস্কৃতি দিন দিন বিলুপ্তির পথে যাচ্ছে। পাকিস্তান শাসনের সময়ে পূর্ব বাংলায় বাঙালিদের উপর উর্দু ভাষাকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বাংলা ভাষাকে হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষার জন্য বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন গড়ে ওঠে। আজকের দিনে আদিবাসীদের ভাষা ও সংস্কৃতিগত সচেতন দরকার। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছেন নিজ নিজ ভাষা সংস্কৃতি নিয়ে অধিকতরভাবে কাজ করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব।’’
ড. আনন্দ বিকাশ চাকমা বলেন, "আজকের দিনে অনুশীলন ও চর্চার অভাবে আদিবাসীদের সংস্কৃতি সংকটে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য নতুন প্রজন্মের জন্য ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।"
জেসী ডেইজি মারাক বলেন, "পৃথিবীতে অনেক ভাষা হারিয়ে যেতে বসেছে। ভাষা একটি জনগোষ্ঠীর জীবনের অংশ। একটা জনগোষ্ঠী তখনই পরিপূর্ণ হয়ে উঠে যখন সে নিজের মাতৃভাষা নিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে।"
আলোচনা সভা শেষে রঁদেভূর শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক
অনুষ্ঠান হয়। এছাড়াও চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের আদিবাসী শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং
অনুষ্ঠানে চারুকলায় অধ্যয়নরত আদিবাসী শিক্ষার্থীদের নানা শিল্প ও চিত্রকর্ম
প্রদর্শিত হয়।