তারুণ্যের উৎসবে বিকেএসপি’র উম্যাচিং মারমার স্বর্ণপদক জয়

 


নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আয়োজিত তারুণ্যের উৎসবে স্বর্ণপদক জিতেছেন বিকেএসপি উম্যাচিং মারমা। বৃহস্পতিবার টঙ্গীর আর্চারি ক্যাম্প মাঠে পুলিশের ইতি খাতুনকে হারিয়ে স্বর্ণপদক জেতেন তিনি।  

নকআউট রাউন্ডে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছে উম্যাচিংকে। কিন্তু সেটি জয় করতে পেরেছেন তিনি। কীভাবে জয় করলেন নিয়ে উম্যাচিং মারমা বলেন, ‘ম্যাচের সময় আলম স্যার (বিকেএসপির প্রধান কোচ নূরে আলম) পেছনে ছিলেন, তখন মনে মনে ভাবছিলাম আজ যদি হেরে যাই, তবে স্যার কষ্ট পাবেন। আমি চাইনি স্যার কষ্ট পাক। স্যারকে খুশি করতে চেয়েছি, আর সেটা মনে করেই তীর ছুড়েছি। তারপর তো পদক জিতলাম; স্যারেরাও খুশি হয়েছেন। অনেকদিন পর স্যারদের মুখে হাসি দেখেছি।

বান্দরবানের থানচির মেয়ে উম্যাচিং। আঠারো পেরোনোর আগেই ২০২৩ সালে জাতীয় দলের দরজা খুলে গিয়েছিল তাঁর সামনে। কিন্তু পারফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়েন এক বছরের মধ্যেই। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিজেকে খুঁজে পেলেন তিনি।

পারফরম্যান্সকে আরও উন্নত করে নিজেকে শানিয়ে জাতীয় দলে ফিরতে চান উম্যাচিং। বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন,জাতীয় দলে ফেরার জন্য আমার আত্মবিশ্বাস আছে। বৃহস্পতিবার যে পারফর্ম করেছি, সেটা হয়তো খুব ভালো না। তবে যেটা হয়েছে, বলব ভালোই হয়েছে, কিন্তু আমি মনে করি জাতীয় দলে ফেরার জন্য আরও ভালো করতে হবে।

উল্লেখ্য, ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাইপ্রতিপাদ্যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে শুরু হয়েছে তারুণ্যের উৎসব। যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে তারুণ্যের উৎসবের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। কর্মসূচি চলবে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত।

তারুণ্যের উৎসব ২০২৫-এর লক্ষ্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা, পারস্পারিক সহযোগিতার মানসিকতা গড়ে তোলা এবং বাংলাদেশের বৈচিত্র্য সংস্কৃতির সৌন্দর্যকে উদযাপন করা।

আদিবাসীদের ওপর হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি

 


ঢাকার মতিঝিলেসংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা ওপর হামলাকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম দিয়েছেন বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ। না হলে সারা দেশের আদিবাসীরা আন্দোলনে নামবে বলেও ঘোষণা দেন তিনি।

আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে আয়োজিত আদিবাসীদের ওপর হামলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি আদিবাসী শব্দ সংবলিত গ্রাফিতি পুনর্বহালের দাবিতে আয়োজিত এক প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক সমাবেশে তিনি ঘোষণা দেন। বাংলাদেশ ইন্ডিজেনাস আর্টিস্ট ইউনিটি সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে আদিবাসীদের ওপর হামলার বিভিন্ন চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

অলিক মৃ বলেন, গত ১৫ তারিখে আদিবাসীদের উপর হামলা করা হলেও আজকে ২৪ তারিখ হয়ে গেছে। তবুও সরকারের কোন দৃশ্যমান কর্মসূচি দেখতে পাচ্ছি না। সরকার শুধু একটা বিবৃতি দিয়ে দায় এড়াতে পারেন না।

এখনো গ্রাফিতি পুনর্বহাল করেনি। শুধু দুইজনকে নামমাত্র গ্ৰেপ্তার করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে চিঠি দিয়ে বলা হচ্ছে আদিবাসী শব্দ ব্যবহার ব্যবহার করা যাবে না।

তিনি আরো বলেন, গতকাল দেখলাম মিছিলে যারা হামলা করেছে, তারাই অন্য ব্যানার ব্যবহার করে আমাদের শাস্তি চাচ্ছে। হামলার মূলহোতাদের এখনো গ্রেপ্তার করা হয় নাই। তারা অনলাইনে টকশো করে বেড়াচ্ছে। পুলিশ এখনো তাদের ধরতে পারে নাই।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা রিপন চন্দ্র বানাই বলেন, আমরা আদিবাসীরা এ দেশের নাগরিক। আমরা দ্বর্থ্যহীন ভাষায় বলতে চাই, বাংলাদেশে আদিবাসী নামটি কখনোই মুছে ফেলে দেওয়া যাবে না। যত চেষ্টাই করা হোক না কেন, আদিবাসীরা তত বেশি গর্জে উঠবে।

আদিবাসী সংবাদমাধ্যম আইপিনিউজের নির্বাহী সম্পাদক সতেজ চাকমা বলেন, এই ভূখণ্ডে আদিবাসীদের উপর নিপীড়ন শুধু আজকের না। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে শুরু করে পাকিস্তান আমল এবং বাংলাদেশেও নিপীড়ন হচ্ছে

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে সংগীত পরিবেশন করেনকৃষ্ণকলি’, ‘সায়ান, ‘মাদল’, ‘বাংলা ফাইভ’, ‘এফ মাইনর’, ‘তুহিন কান্তি দাস’, ‘মরফিন ক্লাউড’, ‘দ্যা রাবুগা’, ‘ভিয়েন্টো’, ‘রেড টুইলাইটব্ল‍্যাক বার্ডস

মিঠুন রাকসাম, পরাগ রিছিল, সান্তআ ত্রিপুরা, কুর্নিকোভা চাকমা, আদ্রিতা চাকমা কবিতা আবৃত্তি করেন। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা, শিক্ষা ক্রীড়া সাংস্কৃতিক সম্পাদক উজ্জ্বল আজিমও সমাবেশে উপস্থিত থেকে সংহতি জানান।

© all rights reserved - Janajatir Kantho