জাতীয় যুব জিমন্যাস্টিক্সে হ্লাখিং মারমার দুটি স্বর্ণজয়

 


প্রথমবারের মতএসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাইপ্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে জাতীয় যুব জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা। বুধবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের জিমন্যাশিয়ামে অনুষ্ঠিত মেয়েদের ডিসিপ্লিনে দুটি স্বর্ণপদক জিতেছেন কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের হ্লাখিং মারমা। আনইভেন বার ফ্লোর ইভেন্টে এই স্বর্ণপদক দুটি জেতেন তিনি।

ছাড়া ভল্টিং টেবিলে বিকেএসপির বনফুলী চাকমা এবং ব্যালান্স বীমে স্বর্ণ জিতেছেন কোয়ান্টাম কসমো স্কুলের মেমেসিং মারমা।

ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান জামিল বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এক মুহূর্ত। যেখানে গণতন্ত্র মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচারের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন ছাত্র-তরুণ সাধারণ জনগণ। ছাত্র-জনতার সেই আত্মত্যাগের স্মরণে সরকারের ঘোষিত তারুণ্যের উৎসবে অংশ হিসেবেই আমরা এই খেলার আয়োজন করেছি।

দুই দিনব্যাপী খেলা শেষে আজ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন যুব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী।

দেশের প্রথম নারী ফরেস্টার হলেন মিতা তঞ্চঙ্গ্যা

 


দেশের প্রথম নারী ফরেস্টার হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন পাহাড়ের মেয়ে মিতা তঞ্চঙ্গ্যা। দেশে এ পদে তিনি হবেন বন অধিদপ্তরের প্রথম নারী কর্মকর্তা। বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের বঙ্গপাড়ার গুণধর তঞ্চঙ্গ্যার মেয়ে তিনি। আজকের পত্রিকা।  

পরিবারে পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছোট। বড় বোন সহকারী শিক্ষক এবং অন্য ভাইয়েরা ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত। মা ছিলেন গৃহিণী।

মিতা রাঙামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার তাইতংপাড়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয় থেকে ২০১৮ সালে এসএসসি পাস করেন। এরপর এফএসটিআইয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হিসেবে ২০২৩ সালের সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেন। সেই বছরের জুন মাসে কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে ফরেস্ট ডিপ্লোমায় প্রথম স্থান অধিকার করেন।

তিনি চট্টগ্রামের ফরেস্ট্রি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট থেকে ২৪তম ব্যাচে ডিপ্লোমা ইন ফরেস্ট্রি কোর্স সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি বন অধিদপ্তরের ফরেস্টার পদের পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সুপারিশপ্রাপ্ত হন।

মিতার প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার জীবন এত সহজ ছিল না। তাঁর সঙ্গে ছিল না কোনো মেয়ে সহপাঠী। ছেলেদের সঙ্গে কাটাতে হয়েছে প্রায় পুরো শিক্ষাজীবন। মিতা বলেছেন, ‘আমাদের আদিবাসী মেয়েরা অনেক ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। আমি চাই এই কঠিন পেশায় পাহাড়ের আদিবাসী মেয়েরা আরও এগিয়ে আসুক।

এক্ষেত্রে কিছু বাধ্যবাধকতার বিষয়েও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মিতা। জানিয়েছেন, মেয়েদের শারীরিক যোগ্যতার ক্ষেত্রে প্রয়োজন ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতা। দেখা গেছে ৫ ফুট ২ থেকে ৩ ইঞ্চি থাকার কারণে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও ভাইভায় উচ্চতার কারণে বাদ পড়ে গেছেন অনেকে। একই কারণে শুধু পাহাড়ি মেয়েরাই নয়, বাঙালি মেয়েরাও বাদ পড়ে গেছেন। বিষয়টি শিথিল করা প্রয়োজন বলে মনে করেন মিতা।

আদালতের রায় পেলেও জমির মালিকানা পাচ্ছেন না গোবিন্দগঞ্জের আদিবাসীরা

 


গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে আদালতের রায় পেলেও জমির ভোগ দখল করতে পাচ্ছেন সাঁওতাল পল্লীর আদিবাসীরা। উপুর্যুপরি হামলার শিকার হয়েছেন। সাঁওতাল পল্লীর আদিবাসীদের জমি দখল ও বাড়িতে অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। ঢাকা পোস্ট। 

আজ (মঙ্গলবার) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে এএলআরডি, ব্লাস্ট, বাংলাদেশে আদিবাসী ফোরাম, কাপেং ফাউন্ডেশন, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, নিজেরা করি, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন, বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, আদিবাসী-বাঙালি ঐক্য পরিষদ, পিইউপি, রোপ, স্বপ্ন, পেইস্ট, ছিন্নমূল, পল্লী উন্নয়ন অগ্রগতি, নিত্য বিকাশ কেন্দ্র ও তরণীর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (এএলআরডি) প্রোগ্রাম ম্যানেজার রফিক আহমেদ সিরাজী বলেন, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের রাজাবিরাট এলাকায় গত ৩ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে আদিবাসীদের ভোগদখলীয় জমিতে রাজাহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার লোকেরা মাটি ভরাট করতে শুরু করলে কয়েকজন যুবক তাতে বাধা দেন। তখন চেয়ারম্যান ও তার লোকজন সাঁওতাল সম্প্রদায়ের নেকোলাস মুর্মুর নামে এক যুবককে মারধর করেন। খবর পেয়ে ব্রিটিশ সরেন নামে এক যুবক প্রতিবাদ করতে গেলে চেয়ারম্যান তাকেও লাঠি দিয়ে মারধর করার হুমকি দেন।

এ সময় ব্রিটিশ সরেনের মা ফিলোমিনা হাঁসদা চেয়ারম্যানের লাঠি ফেরাতে গেলে চেয়ারম্যান তাকে মারধর করে মাটিতে ফেলে দেন। এতে তিনি মারাত্মক আহত হন। বর্তমানে তিনি বগুড়ার জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার জেরে একইদিন রাত ১১টার দিকে ব্রিটিশ সরেনের বাড়িতে চেয়ারম্যানের লোকজন আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এতে মাটির ঘরের ভেতরের আসবাব, কাপড় ও টিনের চাল পুড়ে গেছে।

এ ঘটনাকে সামনে রেখে ঢাকা, বগুড়া ও গাইবান্ধার ১৭টি ভূমি অধিকার ও মানবাধিকার সংগঠন সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধান করেছে। প্রতিনিধি দল ভুক্তভোগী, স্থানীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করছেন।

রফিক আহমেদ সিরাজী বলেন, ভুক্তভোগী ব্রিটিশ সরেন জানিয়েছেন, এই এলাকায় তাদের ৩ একর ৭২ শতক জমি রয়েছে। সি এস খতিয়ানে এই জমির মালিক লক্ষণ হেমব্রম। তিনি এ জমি পেয়েছিলেন রাজা শৈলাস চন্দ্র রায়ের কাছ থেকে। জমিদারি প্রথা বিলোপ হওয়ার পর লক্ষণ হেমব্রম তার দাদি মাইকা হেমব্রমের নামে এ জমি রেকর্ড করে দিয়েছেন। সেই থেকেই তারা এ জমি ভোগ দখল করে আসছেন। কিন্তু হঠাৎ করে কেরু মণ্ডল নামে এক বাঙালি দাবি করেন তিনি চেক দাখিলা মূলে এ জমির মালিক হয়েছেন। এ নিয়ে ব্রিটিশ সরেনদের পূর্ব পুরুষদের সঙ্গে একটি মামলা হয় তাতে ১৯৮০ সালে সাঁওতালরা তাদের পক্ষে রায়ও পেয়েছেন। কিন্তু তারপরও তারা তাদের জমি ভোগ দখল করতে পারেনি।

কেরু মণ্ডলের নামে এস এ খতিয়ান হলেও আদালতের রায়ে তার মালিক ব্রিটিশ সরেনরা। কিন্তু বিআরএস খতিয়ান হওয়ার সময় কেরু মণ্ডল আদালতের রায় গোপন করে তার নামে তা করে নেয়। কিন্তু পরবর্তীতে যখন কেরু মণ্ডল বুঝতে পারে কোনো অবস্থায়ই তিনি জমি পাবেন না তখন ব্রিটিশ সরেনদের নামে রেজিস্ট্রি করে তা ফেরত দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মূলত কেরু মণ্ডল প্রমাণ করতে চেয়েছে এ জমির মালিক তিনি। এরপর ওই জমি তার ছেলে হবিবুর মণ্ডল রাজাহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের কাছে বিক্রি করে দেন। সেই অবৈধ কাগজের বলে চেয়ারম্যান এ জমির মালিক দাবি করে আসছেন। যার আদতে কোনো ভিত্তি নেই। চেয়ারম্যান স্থানীয় বিএনপির প্রভাশালী নেতা ছিলেন। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ৫ জানুয়ারি তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

সংবাদ সম্মেলনে এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার নাথ, ব্লাস্টের আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. রোবায়েত ফেরদৌস, বারসিকের পরিচালক পাভেল পার্থ, কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক হিরণ মিত্র চাকমা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ফুটবলকে বিদায় জানালেন সাফজয়ী আনাই মগিনী!

 


২০২২ সালে সাফে প্রথম শিরোপা জেতার পর হুট করে ফুটবল ছেড়ে দিয়েছিলেন সিরাত জাহান, আঁখি খাতুন, আনুচিং মগিনী। এবার আরও এক ফুটবলার ঝরে পড়লেন। ফুটবলকে বিদায় জানালেন আনাই মগিনী! অনেকের ধারণা, দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় দলে সুযোগ না পাওয়ায় অভিমানেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। জাগো নিউজ।

ছুটি শেষে ১৫ জানুয়ারি আবার শুরু হয়েছে সিনিয়র নারী ফুটবলারদের ক্যাম্প। অক্টোবরে সাফ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে অনির্দিষ্টকালের জন্য সিনিয়র ফুটবলারদের ছুটি দিয়েছিল বাফুফে। সেই ছুটি শেষ হয়েছে ১৪ জানুয়ারি।

৩১ ফুটবলারকে ক্যাম্পে যোগ দিতে বলা হয়েছিল। রোববার দুপুর পর্যন্ত ২৮ জন যোগ দিয়েছেন। বাকি ৩ জন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন, আনাই মগিনি ও শামসুন্নাহার জুনিয়র। এই তিন জনের মধ্যে সাবিনা ও শামসুন্নাহার ছুটি বাড়িয়েছেন। আর আনাই ক্যাম্পে যোগ দেবেন না বলে জানিয়েছেন। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নারী ফুটবল দলের সহকারী কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু।

বিষয়টি নিশ্চিত হতে ফোন করে আনাইকে পাওয়া যায়নি। বিকল্প হিসেবে তার বোন আনুচিংকে ফোন করলে তিনি জানান, ‘দিদি (আনাই) এখন বাসায় নেই। আরেক দিদির বাসায় ঘুরতে গেছে। সে কারো সাথে যোগাযোগ করছে না। তার ফোন নম্বরও বদলিয়েছে। নতুন নম্বর কাউকে দিতে বারণ আছে।

খাগড়াছড়ির সাতভাই পাড়া গ্রামের একটি পাহাড়ের পাদদেশে আনাই-আনুচিংদের ঘর। ২০০৩ সালের ১ মার্চ ওই গ্রামের রিপ্রু মঘ ও আপ্রুমা মগিনী দম্পতির ঘরে জন্ম যমজ এই দুই বোনের। বাড়ির পাশে আছে একটি রাবার বাগান। সেখানে এক টুকরো খোলা জায়গায় বল নিয়ে খেলা করতো দুই মিনিট আগে-পরে পৃথিবীতে আসা যমজ বোন আনাই আর আনুচিং।

আনুচিং মগিনি ও আনাই মগিনি দুই বোনই ছিলেন ২০২২ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের দলে। খেলার সুযোগ পাননি কেউ। ক্যাম্পে থাকলেও ২০২৪ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের দলেই নেওয়া হয়নি আনাই মগিনিকে। সাফের আগে বাংলাদেশ ভুটান সফর করেছিল নারী ফুটবল দল। সে সফরেও বিবেচনা করা হয়নি আনাইকে। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস এবং বছরের পর বছর খেলার সুযোগ না পাওয়ার অভিমান থেকেই ছোট বোনের পথ ধরে অভিমান করে ফুটবলই ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আনাই।

সাবেক সেনাকর্মকর্তাকে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দিল সরকার

 


পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) অনুপ কুমার চাকমা। সচিব পদমর্যাদায় চুক্তি ভিত্তিক দুই বছরের জন্য নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি বৈদেশিক নিয়োগ শাখার উপসচিব আবুল হায়াত মো. রফিকের স্বাক্ষর করা এক প্রজ্ঞাপনে তথ্য জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন, ২০১৪-এর () ধারা অনুযায়ী মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) অনুপ কুমার চাকমাকে অন্য যে কোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধাসরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে বছর মেয়াদে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে সরকারের সচিব পদমর্যাদায় আর্থিক সুবিধাদিসহ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।

নিয়োগের অন্যান্য শর্ত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে এবং জনস্বার্থে আদেশ জারি করা হলো বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর ১১ আগস্ট উপদেষ্টা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের তৎকালীন চেয়ারম্যান সুপ্রদীপ চাকমা। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর শূন্য হয় উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান পদটি। বিগত ৪ মাসের বেশি সময় ধরে চেয়ারম্যান পদটি শূন্য থাকার পর অবশেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিল সরকার।

 

‘আদিবাসী’ হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি

 


সংবিধানে আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। আজ বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশেসংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা সমাবেশ করে।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে ইউল্যাবের শিক্ষক শিক্ষক নেটওয়ার্কের সদস্য অলিউর সান বলেন, ‘জাতিসংঘের আদিবাসী সনদে অধিকাংশ দেশ স্বাক্ষর করেছে। খুব নগণ্য সংখ্যক স্বাক্ষর করেনি। যারা বিরোধিতা করেছে, তারা সাদা চামড়ার লোক আর আদিবাসীদের ভূমি দখল করেছে। তাদের ভূমি দখল করে ধরনের আলাপ চলতে পারে না। আগে তাদের ভূমি ফিরিয়ে দেন। সেটি না করে কোনও নাম দিলেই সমস্যার সমাধান হবে না।

হামলা নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করারও আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশে হাইকোর্টের অ্যাডভোকেট নিকোলাস চাকমা বলেন, ‘আমরা আদিবাসী স্বীকৃতি চাচ্ছি বলে আমাদের বলা হচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদী। জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সামনে হামলার বিষয়ে আমরা মামলা করবো। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রতিবাদী বিক্ষোভ মিছিলে হামলার বিষয়ে সুস্পষ্ট বক্তব্য চাই। সংবিধানে আদিবাসী হিসেবে আমাদের স্বীকৃতি দিতে হবে।

বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অলিক মৃ বলেন, ‘আমরা অধিকারের জন্য অনেক রক্ত দিয়েছি। তারা আমাদের ধ্বংস করতে চায়। আমরা বুলেটের মতো শক্তিশালী হবো। ১৫ জানুয়ারির হামলায় আমাদের ২১ জন ভাই-বোন আহত হয়েছেন। যার নেতৃত্বে আক্রমণ হয়েছে, সে এখনও বিভিন্ন মিডিয়ায় টকশো করে বেড়াচ্ছে। তার বিরুদ্ধে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমাদের সঙ্গে বসবে। আমাদের দাবি না মেনে নিলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাবো।

 


ঢাকায় আদিবাসীদের ওপর হামলার ঘটনায় ১৬ জনের নামে মামলা

 


ঢাকায় আদিবাসী বিক্ষোভকারীদের ওপর বুধবারের হামলার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির সদ্য বহিষ্কৃত এক সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলায় আরও অন্তত ২০০-৩০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। দ্য ডেইলি স্টার।

পাঠ্যপুস্তকে আদিবাসী শব্দসংবলিত গ্রাফিতি রাখা ও নারাখা নিয়ে গত বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ভবনের সামনে 'সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার' মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটে। 'স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি' নামের একটি সংগঠনের নেতাকর্মীদের এই হামলায় অন্তত ২০ জন আহত হন।

মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন জানান, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের ঢাকা মহানগর ইউনিটের সভাপতি জগদীশ চাকমা বৃহস্পতিবার মতিঝিল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

অভিযুক্ত যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তারা হলেন: আরিফ আল খবির (৩৮), মো. আব্বাস, ২৪; ঢাবির আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জিয়াউল হক (২৮); ঢাবির অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রাহাত (২৩); ঢাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং স্টুডেন্টস ফর সভরেনিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াকুব মজুমদার (২০); ঢাবির যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের শিক্ষার্থী শহীদুর রহমান (২৫); জাতীয় নাগরিক কমিটির ধানমন্ডি ইউনিটের সদ্য বহিষ্কৃত সদস্য শাহাদাত ফারাজী সাকিব (৩৫); শওকত (২১); রাজন হোসেন (২০); ওয়াফি (২০); মনোয়ার (২৪); নুহান (২০); জিহাদ (২২); সজীব (২৫); আব্দুল মালেক (২৮) ও গোলাম আলী নাঈম (২৪)।

এদের মধ্যে আরিফ আল খবির ও মো. আব্বাসকে বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যেই জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সাকিবকে হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে।

 

© all rights reserved - Janajatir Kantho