মানবন্ধনে ফারুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সজল চাকমার
সঞ্চলনায় স্মারকলিপি পাঠ করেন বৃষ্টি চাকমা। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন থুমপাড়ার
বাসিন্দা মদন বিকাশ চাকমা, দুলু পাড়ার বাসিন্দা পূণ্য রানী চাকমা।
থুম পাড়ার বাসিন্দা মদন বিকাশ চাকমা বলেন, ‘আমরা
জুম করতে পারছি না। নিরাপত্তা বাহিনী বাধা দিচ্ছে। হুমকি দিচ্ছে। তারা আমাদের জমি ও
বাগানগুনো দখল করেছে। জুম করতে না পারলে কীভাবে বাঁচবো আমরা?’
দুলু পাড়ার বাসিন্দা পূণ্য রানী চাকমা বলেন, ‘আমাদের
পাড়াগুলোতে জুম করতে দেওয়া হচ্ছে না। বাগান, সহায়-সম্পত্তি নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে।
আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন যদি না থাকে কীভাবে বাঁচবো?’
সংহতি বক্তব্যে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা বলেন,
‘পার্বত্য চট্টগ্রামে উন্নয়ন চলছে বলা হচ্ছে। কিন্তু এই উন্নয়নে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর
যদি জীবনের মানোন্নয়ন না হয় তাহলে সেটা কীসের জন্য? আজকে যারা ভূমি হারাতে বসেছে
তারা নিজেদের বোবা কান্না গুলো শোনাতে এসেছে। এটা তাদের জীবন মরণের বিষয়। তাদের মাথা
গোঁজার ঠাঁই কেড়ে নিয়ে পর্যটন করা হচ্ছে তাহলে সেটা কীসের উন্নয়ন?।’
তিনি আরো বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির মূল
নির্যাস হলো পাহাড়ী জনগণের জীবন-জীবিকা ও অস্তিত্ব সংরক্ষণ করা। কিন্তু সরকার পার্বত্য
চুক্তিকে পাশ কাটিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো উন্নয়নের নামে আগ্রাসন চালাচ্ছে।’
সভাপতির বক্তব্যে দুলু পাড়ার কার্বারি অজিত কুমার
চাকমা বলেন, ‘আমরা দুই গ্রামবাসী অনেক কষ্টে আছি। আমাদেরকে গ্রাম ছেড়ে যেতে হুমকি
দেওয়া হচ্ছে। আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। হলুদ, আদা, কলা ইত্যাদি চাষ করে পেট চালাই। এখন
যদি আমাদের ভূমি চলে যায়, জুম করতে না পারি কীভাবে বাঁচবো?’
মানবন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে সংহতি বক্তব্য প্রদান
করেন পিসিপির রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি জিকো চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয়
সাংগঠনিক সম্পাদক উলিসিং মারমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের
সাধারণ সম্পাদক ইন্টু মনি তালুকদার প্রমুখ।
মানববন্ধন শেষে পাড়াবাসি, রাঙ্গামাটি শহরের সুশীল
সমাজ ও বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চল শাখার নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে
প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। এসময় ডিসি সমস্যা সমাধানে যথাযথ চেষ্টা
চালাবেন বলে নেতৃবৃন্দকে আশ্বস্ত করেন।