সর্বশেষ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সর্বশেষ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

‘পার্বত্য চট্টগ্রামকে জুম্মল্যান্ড বানানোর গুজব ছড়ানো হচ্ছে’

 


বিভিন্ন মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে জুম্মল্যান্ড বানানোর গুজব ছড়ানো হচ্ছে। সেটা ঠিক নয়। জনসংহতি সমিতি পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করতে নয়, অন্তর্ভুক্ত করতে চুক্তি বাস্তবায়ন চায়।

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাঙামাটি শহরের জিমনেসিয়ামে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জনসংহতি সমিতি আয়োজিত গণসমাবেশ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঊষাতন তালুকদার এসব কথা বলেন।

জেএসএস এর সিনিয়র সহসভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার বলেছেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করার যে অপপ্রচার হচ্ছে, তা সরকার বিশ্বাস করে। সেই অপপ্রচার থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিচ্ছিন্ন নয়, অন্তর্ভুক্ত হবে। দেশের স্বাধীন সার্বভৌমত্বের কথা মেনে ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তি হয়েছে।

এর আগে সকালে জাতীয় সংগীত দলীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি শুরু হয়।

পরেপার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিবিরোধী জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করুন; পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের বৃহত্তর আন্দোলন জোরদার করুন- এই স্লোগানে গণসমাবেশ আলোচনা সভা হয়।

সভায় জনসংহতি সমিতির সদস্য গুনেন্দু বিকাশ চাকমা সভাপতিত্ব করেন। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে জেএসএস কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক কে এস মং মারমা, আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা, জেএসএস সদস্য জুয়েল চাকমা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি শান্তি দেবী তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

‘বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন বিদ্যমান’

 


বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন বিদ্যমান। এরপর আশির দশকে অপারেশন দাবানল নামে সেনাশাসন ছিল। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর সে সেনাশাসন অপারেশন উত্তরণ নামে বিদ্যমান আছে।

বৃহস্পতিবার রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের এনেক্স ভবনের সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আয়োজিতবৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় যুব সমাজের ভূমিকাশীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা।

সন্তু লারমা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত বৈষম্য বিরাজমান। দেশের শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের বিশ্বাস করে না। ধর্মীয় এবং সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন। এখানকার মানুষদের সঙ্গে যুগ যুগ ধরে বৈষম্য করা হয়েছে। এখনো সেই বৈষম্য বিদ্যমান। এই বৈষম্য দূর করতে যুবসমাজকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।

সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। তিনি বলেন, ‘কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করা হয়। প্রকৃত অর্থে পাহাড়ের স্থায়ী বাঙালিদের সঙ্গে পাহাড়িদের কোনো বিরোধ নেই। আদিবাসী মানে বাঙালি মাইনাস নয়, ভুল ভাঙতে হবে। বিরোধ যেন না থাকে সে জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যা অনুপাতের হিসাব দেখিয়ে একটি অংশ দাবি তুলেছে, জেলা পরিষদ আইন, ভূমি কমিশন আইন পরিবর্তন করতে হবে। সেখানে বাঙালি ভাইস চেয়ারম্যান দাবি করা হচ্ছে।

একে তামাশা উল্লেখ করে রাজা বলেন, ‘তা যদি হয় তাহলে ডিসি যদি বাঙালি হয়, তাহলে এডিসি পাহাড়ি, ব্রিগেড কমান্ডার বাঙালি হলে কমান্ডিং অফিসার পাহাড়ি হবে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র কি কাজটা করবে?’

তিনি আরও বলেন, ‘এখানে বৈষম্য জারি রাখা হয়েছে। বিদেশ থেকে কোনো রাষ্ট্রদূত রাঙামাটিতে আসলে আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে দেওয়া হয় না। রাজবাড়ীতে যেতে পারেন না এসব অতিথি।

সেমিনারে বিশেষ আলোচক ছিলেন রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার। এছাড়াও আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং মারমা, শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা, প্রভাষক আনন্দ জ্যোতি চাকমা, উন্নয়ন কর্মী গবেষক তনয় দেওয়ান, সাংবাদিক হিমেল চাকমা, সৈকত রঞ্জন চৌধুরী, উদ্যোক্তা রোজিনা ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 

ম্রো ভাষায় নির্মিত হল প্রথম চলচ্চিত্র ‘ক্লোবং ম্লা’

 


দেশে প্রথমবারের মতো নির্মিত হল ম্রো ভাষায় চলচ্চিত্রক্লোবং ম্লা যার বাংলা নামগিরিকুসুম চলচ্চিত্রটির নির্মাতা প্রদীপ ঘোষ। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ধানমণ্ডিতেমাতৃভাষা চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫’- চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হবে।

ম্রো ভাষার প্রথম চলচ্চিত্রটির প্রযোজক ডা. মং উষা থোয়াই। বান্দরবানের প্রবীণ চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরেই চেষ্টা করে যাচ্ছেন পাহাড়ের বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর ভাষায় চলচ্চিত্র নির্মাণের। এর আগে মারমা ভাষায় প্রথম চলচ্চিত্রগিরিকন্যাপ্রযোজনা করেছেন তিনি।

ডা. মং উষা থোয়াই বলেন, ‘পার্বত্য এলাকায় ১১টি জাতিগোষ্ঠীর মানুষ আছে। প্রত্যেকের নিজস্ব ভাষা বর্ণমালা আছে। সেসব সিনেমার মাধ্যমে তুলে ধরতে চাই আমি।

ক্লোবং ম্লা কাহিনি লিখেছেন ম্রো ভাষার লেখক গবেষক ইয়াংঙান ম্রো। ম্রো ভাষার প্রথম অভিধান লিখেছেন তিনি। লিখেছেন নিজ ভাষার প্রথম ব্যাকরণও। ম্রো ভাষায় প্রকাশিত প্রথম বইটিও তাঁর লেখা। এবার নিজেদের প্রথম চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়াল তাঁর নাম।

ম্রো সমাজে খুবই জনপ্রিয় প্রচলিত গল্প ‘ক্লোবং ম্লা। ক্লোবং নামের এক কন্যাশিশুকে কেন্দ্র করে আবর্তিত গল্পটি। শৈশবে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ক্লোবংয়ের মা-বাবা। একমাত্র বড় ভাই ক্লোবংকে আদর-স্নেহে বড় করে তোলে। ভাইটি জুম কাজে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকত আর ক্লোবং ঘরের যাবতীয় কাজ করত। একসময় তার ভাই বিয়ে করে। কিন্তু আদর-স্নেহ দূরে থাক, ক্লোবংকে অত্যাচার করতে থাকে তার বৌদি। প্রিয় বোনের প্রতি এমন অত্যাচার মেনে নিতে পারেনি বড় ভাই। নানা ঘাত-প্রতিঘাতে সমাপ্তির দিকে যায় কাহিনি।

চিম্বুক, রামরিপাড়াসহ বান্দরবানের বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবিটির শুটিং। ১৮ মিনিট ব্যাপ্তির চলচ্চিত্রটিতে মূলত ম্রোদের পারিবারিক জীবন ও সংগ্রাম চিত্রায়িত হয়েছে। অভিনয় করেছেন ইয়াংঙান ম্রোসহ বান্দরবানের ম্রো জনগোষ্ঠীর ১৫ জন। তাদের সবার জীবনে অভিনয়ের হাতেখড়ি হয়েছে এই সিনেমা দিয়েই।

© all rights reserved - Janajatir Kantho