সংস্কৃতি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সংস্কৃতি লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

খাগড়াছড়িতে আদিবাসী সাজে দেবী দুর্গা

 


শাড়ীর বদলে দেবী দুর্গাকে পরানো হয়েছে রিনাই-রিসা ও গহনা। এটি ত্রিপুরা আদিবাসীদের নিজস্ব পোশাক। নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক-অলংকারে দেবীকে সাজিয়ে আরাধনা করার এই চিত্র খাগড়াছড়ির খাগড়াপুর এলাকার পূজা মণ্ডপের। পেছনে পাহাড়, সূর্য, আকাশ আর মেঘের আদলে তৈরি করা মণ্ডপ আকর্ষণ ছড়াচ্ছে দর্শকদের মাঝে।

দেবীর ডান পাশে লক্ষ্মী ও কার্তিক, বামে সরস্বতী ও গণেশ। তাদের পরনেও ঐতিহ্যবাহী পোশাক আর অলংকার। দেখেই মনে হবে যেন স্বয়ং দেবী দুর্গা এসে বসে আছেন সন্তানদের নিয়ে। প্রতিমার সঙ্গে মিলিয়ে মঞ্চসজ্জা আর মণ্ডপে প্রবেশ পর্যন্ত সবকিছুই পাহাড়ে ত্রিপুরাদের সংস্কৃতির আদলে সাজিয়েছেন শিল্পীরা।

দেবীকে সাজানো হয়েছে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক রিনাই–রিসা, গলায় মালা হিসেবে পরানো হয়েছে রুপার চন্দ্রাহার আর পুইসা মালা (যা পয়সা দিয়ে তৈরি বিশেষ মালা), খোঁপায় পরানো হয়েছে সুরাম, কালসি, কানে পড়ানো হয়েছে ‘য়াংকুং, হাতে বাংগ্রী এবং পায়ে পরানো হয়েছে ‘বেংকি

দেবী দুর্গা ছাড়াও একই সাজে সাজানো হয়েছে লক্ষী, সরস্বতীকেও।

স্থানীয়রা জানান, এখানে প্রায় প্রতিবছরই দেবী দুর্গা মাকে ত্রিপুরাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক রিনাই-রিসা আর চন্দ্রাহার সহ বিবিধ অলংকারের সাজে সাজানোর চেষ্টা করা হয়। মঞ্চ সাজসজ্জাও করা হয় প্রকৃতির আদলে। এবারের পূজাতেও তেমনিই করা হয়েছে।

খাগড়াপুর সার্বজনীন শ্রী শ্রী দুর্গা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক চামেলী ত্রিপুরা জানান, মায়ের রূপকে এবার আমাদের ত্রিপুরা রমনীদের সাজে রূপ দেওয়া হয়েছে। আমাদের সংস্কৃতি ঐতিহ্য দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তাই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়।

তঞ্চঙ্গ্যা ভাষায় রচিত দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

 


রাঙ্গামাটিতে তঞ্চঙ্গ্যা জাতির মাতৃভাষায় রচিত দুটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলার কাপ্তাইয়ের বড়ইছড়িস্থ বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুস্তক দুটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

পুস্তক দুটির মধ্যে একটি তঞ্চঙ্গ্যা বর্ণমালা শিক্ষা বিষয়ক পুস্তক ‘আধুনিক তঞ্চঙ্গ্যা বর্ণমালা শিক্ষা এবং অপরটি ‘পেয়ংখুলা'ব ছ। এটি তঞ্চঙ্গ্যা ভাষায় রচিত প্রথম কাহিনীকাব্য।

গ্রন্থ দুটি রচনা করেন তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর জনপ্রিয় সাহিত্যিক ও ভাষাকর্মী চন্দ্রসেন তঞ্চঙ্গ্যা এবং প্রকাশ করেন অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার অমল বিকাশ তঞ্চঙ্গ্যা।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি দীপ্তিময় তালুকদার। অতিথি ছিলেন ওয়াগগা মৌজার হেডম্যান অরুণ তালুকদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন কাপ্তাই অঞ্চলের সভাপতি অজিত কুমার তঞ্চঙ্গ্যা, দেবতাছড়ি-রৈস্যাবিলি অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক অপূর্ব কুমার তঞ্চঙ্গ্যা এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. জয়ধন তঞ্চঙ্গ্যা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিতি অতিথিবৃন্ধ তঞ্চঙ্গ্যা জাতির ভাষা, বর্ণমালা ও সাহিত্যকে টিকিয়ে রাখতে সামর্থ্যবান সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

রাজশাহীতে বৃষ্টির আশায় আদিবাসী রীতিতে ব্যাঙের বিয়ে

ব্যাঙের বিয়ে, বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ে

তীব্র তাপপ্রবাহে স্বস্তির বৃষ্টির আশায় আদিবাসী রীতিতে ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) রাজশাহীর পবা উপজেলার ভুগরইল খ্রিস্টানপাড়ায় আদিবাসী রীতিতে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়। এর মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের কাছে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেন স্থানীয় আদিবাসীরা।

দুটি ব্যাঙের মধ্যে একটির নাম রাখা হয় শিমুল, আর অপরটির নাম মেঘলা। ব্যাঙের বিয়ের খবরে ভুগরইল আদিবাসী পল্লীতে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। শিমুল আর মেঘলার বিয়ে দেখতে ভিড় করেন গ্রামবাসী।

শিমুলকে সাজিয়ে-গুজিয়ে বাদ্যযন্ত্রের তালে-তালে নাচে গানে কনে মেঘলার বাড়িতে রওনা হয় গ্রামবাসী। ডনবক্স চার্চ থেকে প্রায় ২০০ গজ দূরে কনে পক্ষের বাড়ি। কনে মেঘলার বাড়িতে অতিথিদের নিয়ে বর শিমুল পৌঁছালে সেখানে বিয়ে পড়ানো হয় দুজনার। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায় শিমুলের হাত দিয়ে মেঘলার কপালে সিঁদুর দিয়ে দেওয়া হয়।

গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে এ বিয়ের আয়োজন করেন অঞ্জলী বিশ্বাস। তিনি স্থানীয় ডনবক্স চার্চে শিশুদের শিক্ষাদান কর্মসূচির শিক্ষক এবং বর শিমুলের অভিভাবক।

অন্যদিকে, আদিবাসী পরিবারের অনার্স পড়ুয়া জয়া বিশ্বাস কনে পক্ষের অভিভাবক। তার বাড়িতেই বিয়ে পর্বের আয়োজন করা হয়।

বিয়ে শেষে শিমুল ও মেঘলাকে চার্চে নিয়ে এনে মাটির একটি গর্তে পানি দিয়ে তাতে আয়োজন করা হয় বর-কনের বাসরের। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় ব্যাঙের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা।

অঞ্জলি বিশ্বাস বলেন, ‘পুরো বিয়েটাই আয়োজন করা হয়েছে আদিবাসী রীতিতে। বৃষ্টির প্রয়োজন আছে। রোদ আর গরমে মানুষজন ও পশুপাখি থাকতে পারছে না। এজন্য আমরা চাচ্ছি যাতে অন্তত বৃষ্টিটা হয়।

অনাবৃষ্টি বা খরা দেখা দিলে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে যুগ যুগ ধরে এভাবেই ব্যাঙের বিয়ে দিয়ে বৃষ্টির প্রত্যাশা করা হয়।  

ময়মনসিংহে ‘মান্দি মিউজিক ফেস্টিভ্যাল’–এর উদ্বোধন

মান্দি মিউজিক ফেস্টিভ্যাল

ময়মনসিংহে দুইদিনব্যাপী আয়োজিত ‘মান্দি মিউজিক ফেস্টিভ্যাল’–এর উদ্বোধন হয়েছে। আজ শনিবার (১৩ এপ্রিল) বেলা এগারোটায় শহরের কারিতাস অফিস প্রাঙ্গণে আয়োজনের শুভ উদ্বোধন হয়।

উদ্বোধনের আগে গ্রিকার (মান্দি যুদ্ধ নৃত্য) মাধ্যমে অতিথিদের বরণ করে নেন আয়োজনের শিল্পী-কলাকুশলীরা।

এসময় ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিশপ পল পনেন কুবি সিএসসি, কারিতাস বাংলাদেশ ময়মনসিংহ অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক অপূর্ব ম্রং, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মৃনাল মুর্মু সাংমা, শিল্পী যাদু রিছিল, ছড়াকার ও ছাত্রনেতা লিয়াং রিছিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

দুইদিনব্যাপী আয়োজিত এ উৎসবের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ মেঘালয়ের জনপ্রিয় ব্যান্ড দল নকপান্থে। মেঘালয় সহ পুরো ইন্ডিয়াতেই তাদের রয়েছে বিশাল ফ্যানবেজ। ইতোমধ্যেই ব্যান্ড দলটির সদস্যরা ফেস্টিভ্যালে যোগ দিয়েছেন। তারা দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ আগামীকাল সন্ধ্যায় পারফর্ম করবেন। 

জানা গেছে, আয়োজনের প্রথমদিন শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও গসেরঙ কম্পিটিশন (মান্দি ছড়া প্রতিযোগিতা); রেরে, সেরেনজিং, আজিয়ার মতো মান্দি লোকগীতি পরিবেশিত হবে। 

এছাড়াও সন্ধ্যায় ব্যান্ড দল দ্য রাবুগা, অন্তু রিছিল, টগর দ্রং, লাক্সমী থিগিদী সহ অনেকেই গান পরিবেশন করবেন।

লেবিসন স্কুর গল্পগ্রন্থ দলছুট’র মোড়ক উন্মোচন

গারো কবিতা

কবি ও লেখক লেবিসন স্কুর প্রথম গল্পগ্রন্থ দলছুট’র মোড়ক উন্মোচন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গারো বইমেলায় বিশিষ্টজনের উপস্থিতিতে বইটির মোড়ক উন্মোচন হয়।

মোড়ক উন্মোচনকালে তিউড়ি প্রকাশনীর কর্ণধার লেখক মাইবম সাধন, ভারত বিচিত্রার সম্পাদক অরবিন্দ চক্রবর্তী, লেখক পিটারসন কুবি, কবি মিঠুন রাকসাম, ঢাকা ওয়ানগালার নকমা শুভজিৎ সাংমা, কবি নিগূঢ় ম্রং, ছাত্রনেতা তেনজিং দিব্রা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বইটির লেখক লেবিসন স্কু বলেন, বইটিতে গারো আদিবাসীদের সমাজব্যবস্থা, লোক-ঐতিহ্য, গারো মিথ, জাতিত্ব হারানোর হাহাকার, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত অসহায় প্রেম-দ্রোহের গল্প স্থান পেয়েছে।

যোগ করে তিনি আরো বলেন, আমি কবিতা লিখি, দলছুট আমার প্রথম গল্পগ্রন্থ। জানিনা কেমন লিখেছি, মূল্যায়নের দায়িত্ব পাঠকের কাছেই তুলে দিলাম।

বইটি সম্পর্কে তরুণ কবি নিগূঢ় ম্রং জনজাতির কণ্ঠকে বলেন, গল্পগ্রন্থ দলছুট-এ গারো জীবনের নানা অভিজ্ঞতার গল্প স্থান পেয়েছে। আশা করছি বইটি পাঠকমহলে সমাদৃত হবে।  

বইটি রাজধানীর কালাচাঁদপুর শিশু মালঞ্চ স্কুল মাঠ প্রাঙ্গণে মাসব্যাপী চলমান গারো বইমেলা থেকে সংগ্রহ করা যাবে। গত ২২ মার্চ থেকে চলা গারো বইমেলা আগামী ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে।

গারো জাতিসত্তার অন্যতম কবি ও লেখক লেবিসন স্কুর বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার মধুকুড়া গ্রামে। লেখকের অন্যান্য গ্রন্থগুলো হল— মানুষ এক অদ্ভূত সাঁড়াশি অনুবাদক, প্রান্তিক স্বর, বুকের ডালে ঝুলিয়ে দেবো নরম নদী। 

মান্দি মিউজিক ফেস্টিভ্যালে গাইবে ‘নকফান্থে’

বনফুল আদিবাসী গ্রিনহার্ট কলেজে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও শিশু দিবস উদযাপন

বনফুল আদিবাসী গ্রিনহার্ট কলেজ

যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন করলো বনফুল আদিবাসী গ্রিনহার্ট কলেজ। দিবসটি উপলক্ষে রোববার (১৭ মার্চ), রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত কলেজ প্রাঙ্গণে নানা আয়োজন করা হয়।  

বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ গৃহীত কর্মসূচির মধ্যে ছিল বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন ও রাজনীতি বিষয়ক আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং পুরস্কার বিতরণী।

অনুপ্রেরণার বাতিঘর বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালায় প্রধান অতিথি ছিলেন বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও গভর্নিং বডির সভাপতি ভেন. প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজের অধ্যক্ষ সুদীপ কুমার মণ্ডল, একাডেমিক কাউন্সিলের আহ্বায়ক মো. জাকিদুল ইসলাম, সদস্য সচিব সুশীল চাকমা এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য ও শিক্ষক প্রতিনিধি মোস্তাকিয়া মাহমুদা পারভীন প্রমুখ।

প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো বক্তব্যের শুরুতে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। এ সময় তিনি সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি পড়ার পরামর্শ দেন এবং সবাইকে হৃদয়বান হওয়ার কথা বলেন।

 

চবিতে আদিবাসী সংস্কৃতি ও ভাষা বৈচিত্র্য উৎসব

রঁদেভূ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক সংগঠন রঁদেভূর উদ্যোগে চতুর্থবারের মতো আদিবাসী সংস্কৃতি ও ভাষা বৈচিত্র্য উৎসব-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার ‘শেখড়ের টানে তারুণ্যের আহ্বানে, সংস্কৃতির সুর হোক ভাষার জয়গানে’ স্লোগানকে সামনে রেখে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি চবি ক্যাম্পাসের উন্মুক্ত মঞ্চে দুপুর ২টায় শুরু হয়।

এতে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক ও ভাষা গবেষক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর সিরাজ উদ দৌল্লাহ, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. আনন্দ বিকাশ চাকমা, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক জেসী ডেইজি মারাক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক শাং থুই প্রু ও ইংরেজি প্রভাষক নৈরঞ্জনা চাকমা।

রঁদেভূ শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক পহেলা চাকমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি সজীব তালুকদার।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, "আদিবাসী শিশুদের প্রথমে মাতৃভাষা নিয়ে পাঠদান করার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে। আদিবাসীদের মাতৃভাষা তখনই টিকে থাকবে যখন আমাদের প্রজন্মান্তরে সেটি যথাযথ ব্যবহারের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। কোন ভাষায় কথা বলার মানুষ একজন মাত্র থাকলেও সেটাকে অন্যান্য ভাষার মত সমান মর্যাদা দিতে হবে। বাংলাদেশের সংকটাপন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতিকে পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারিভাবে টেকসই কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার।"

প্রফেসর ড. সিরাজ উদ দৌল্লাহ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের পাহাড় ও সমতলে আদিবাসীদের ভাষা-সংস্কৃতি দিন দিন বিলুপ্তির পথে যাচ্ছে। পাকিস্তান শাসনের সময়ে পূর্ব বাংলায় বাঙালিদের উপর উর্দু ভাষাকে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বাংলা ভাষাকে হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষার জন্য বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন গড়ে ওঠে। আজকের দিনে আদিবাসীদের ভাষা ও সংস্কৃতিগত সচেতন দরকার। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করছেন নিজ নিজ ভাষা সংস্কৃতি নিয়ে অধিকতরভাবে কাজ করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব।’’

ড. আনন্দ বিকাশ চাকমা বলেন, "আজকের দিনে অনুশীলন ও চর্চার অভাবে আদিবাসীদের সংস্কৃতি সংকটে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য নতুন প্রজন্মের জন্য ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চার সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।"

জেসী ডেইজি মারাক বলেন, "পৃথিবীতে অনেক ভাষা হারিয়ে যেতে বসেছে। ভাষা একটি জনগোষ্ঠীর জীবনের অংশ। একটা জনগোষ্ঠী তখনই পরিপূর্ণ হয়ে উঠে যখন সে নিজের মাতৃভাষা নিয়ে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে।"

আলোচনা সভা শেষে রঁদেভূর শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। এছাড়াও চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের আদিবাসী শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং অনুষ্ঠানে চারুকলায় অধ্যয়নরত আদিবাসী শিক্ষার্থীদের নানা শিল্প ও চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয়। 

বইমেলায় প্রকাশিত মান্দি লেখকদের বই

 

গারো বইমেলা

স্টাফ রিপোর্টার: অমর একুশে বইমেলায় এবার বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে বেরিয়েছে মান্দি লেখকদের বেশ কয়েকটি বই। যে বইগুলোতে উঠে এসেছে জাতিসত্তার নানা স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির কথা। 

মান্দিদের মাঝে সাহিত্য চর্চাকে গতিশীল করতে, উৎসাহ দিতে  এবং নিজস্ব কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সাহিত্যকে চর্চার ক্ষেত্র তৈরিতে কয়েকটি প্রকাশনী বেশ উল্লেখ্যযোগ্য ভূমিকা রাখছে। যার মধ্যে থকবিরিম, তিউড়ি প্রকাশনীর নাম উপরের দিকে থাকবে।


এবারও থকবিরিম প্রকাশনী থেকে কয়েকজন মান্দি লেখকের বই বেরিয়েছে। যার মধ্যে একটি ‘যৌবনে আত্মপ্রকাশ’। বইটির লেখক ফাদার বাইওলেন চাম্বুগং।


একই প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত আরেকটি বই সুমনা চিসিমের ‘প্রবন্ধ সংগ্রহ’। গ্রন্থটি পাঠকদের মাঝে আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে।


এবারের বইমেলায় কবি ও লেখক পিটারসন কুবির দুইটি বই বেরিয়েছে। যার একটি ‘হৃদ মাঝারে’। এই বইটির প্রকাশনীও থকবিরিম। গ্রন্থ মেলার লিটলম্যাগ চত্ত্বরের ৭৫ নং স্টল থেকে বইটি সংগ্রহ করা যাবে।


আরেকটি ‘জবা নামের ছোট্ট মেয়েটি’। এটি মূলত একটি গল্পের বই। বইটির প্রকাশক তিউড়ি প্রকাশনী। বইমেলার লিটলম্যাগ চত্ত্বরের কথা স্টল (স্টল নং ১০৬) থেকে বইটি সংগ্রহ করা যাবে।


থকবিরিমের আলোচিত আরেকটি বই ‘চায়েন সিনো খেয়েই মরবো’। বইটির লেখক মিঠুন রাকসাম।


মান্দি লেখক গৌরব জি. পাথাং এর প্রকাশিত বই ‘ভালোবাসায় ভালো থাকা’। এটি মূলত একটি কবিতার বই। নব সাহিত্য প্রকাশনী থেকে বইটি প্রকাশিত হয়েছে।

এই প্রথম তরুণ লেখক জাদিল মৃ’র বই ‘আমি এক শূন্য জবা ফুল’ বেরিয়েছে। বোধ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত এ বইটির পরিবেশক আনন্দম প্রকাশনী।  

বইটি নিয়ে তরুণ লেখক জাদিল মৃ জানান, আমি শূন্য, আমরা শূন্য, তুমি শূন্য ও তোমরা শূন্য এবং আমাদের শূন্যতা সব মিলিয়ে ‘আমি এক শূন্য জবা ফুল। বইমেলার ৪৮২ নং স্টলে বইটি পাওয়া যাচ্ছে।

© all rights reserved - Janajatir Kantho