ভারতের উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয়
মণিপুর রাজ্যে ধর্ষণের পর এক আদিবাসী নারীকে পুড়িয়ে হত্যার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার
রাজ্যটির জিরিবাম জেলায় এ ঘটনা ঘটে।
জিরিবাম পুলিশের কাছে ভুক্তভোগীর
স্বামী এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। নিহত নারীর স্বামী যৌন নিপীড়নের দাবি করে
বলেন, একদল দুর্বৃত্ত আমাদের ঘরে এসে হামলা করে। পরে আমার স্ত্রীকে ধর্ষণের পর আগুনে
পুড়িয়ে হত্যা করে। এতে আশপাশের ১৭টি ঘর পুড়ে যায়।
জিরিবাম জেলার পুলিশ স্থানীয়
গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, ৩১ বছর বয়সী ওই নারী স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। ওই
নারীর এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর খবর অনুসারে,
জিরিবামে এ ধর্ষণ, খুন, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট সহিংসতা গেল দুই মাসের স্থবিরতা ভেঙে দিয়েছে।
গত ৭ সেপ্টেম্বর এ জেলায় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এ ধরণের ঘটনা গত বছরের জাতিগত সংঘাতের
প্রথম কয়েক সপ্তাহের ভয়াবহতাকে ফিরিয়ে এনেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে
বলা হয়েছে, হামর, জোমি এবং কুকি এই তিন আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীকে সম্মিলিতভাবে ‘জো’ বলে
চিহ্নিত করা হয়। বৃহস্পতিবারের সহিংসতার আগে জিরিবাম জেলার পুলিশ সুপার জো সমাজের
প্রতিনিধি ও মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি বৈঠক করানোর লক্ষ্যে অনেকটাই এগিয়েছিলেন।
এমন পরিস্থিতিতে এই সংঘাতের ঘটনা সেই আলোচনাকে সম্পূর্ণ ভেস্তে দিল বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয় একজন পুলিশ কর্মকর্তা
বলেন, নির্দিষ্টভাবে আলোচনা ভেস্তে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। জিরিবামে
১৯ অক্টোবরের পর প্রায় দুই সপ্তাহ কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। এ কারণে মনে হচ্ছিল,
আলোচনার একটা বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে। কিন্তু বৃহস্পতিবারের সংঘাতের পরে পরিস্থিতি আবার
জটিল হয়ে উঠল।
২০২৩ সালের মে মাস থেকে ধারাবাহিক
সংঘাতে মণিপুর রাজ্যে এ পর্যন্ত সরকারি হিসাবে প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছেন। এখনো গৃহহীন
অন্তত ৬০ হাজার মানুষ।