জাতীয় লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
জাতীয় লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

‘সংস্কার কমিশনে আদিবাসী-ধর্মীয় সংখ্যালঘু, নারী-প্রান্তিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধি অনুপস্থিত’

 


বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কমিশন নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন চাকমা সার্কেল চিফ (চাকমা রাজা) ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়।

আজ রবিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি সংস্কার কমিশন নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।

চাকমা রাজা লেখেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ছয়টি সংস্কার কমিশন সম্প্রতি ঘোষণা করা হয়েছে, যা অত্যন্ত হতাশাজনক। এতে আদিবাসী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, নারী এবং অন্যান্য প্রান্তিক বা সুবিধাবঞ্চিত গোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত বা দৃশ্যমানভাবে অপর্যাপ্ত।

এটি একজন নোবেল বিজয়ীর নেতৃত্বাধীন সরকারের ভাবমূর্তির ওপর মারাত্মক দাগ বলে মনে করেন ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়।

চাকমা রাজা আরও লিখেন, ‘আমি আশা করছি, কমিশন সংশোধন করে শীঘ্রই এই ভুলগুলো সংশোধন করা হবে। কমিশনের কাজের জন্য দেওয়া স্বল্প সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে, এটি খুব দ্রুত ঘটাতে হবে। যদি তা না হয়, ২০২৪ সালের আগস্টে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছাত্র-নেতৃত্বে আন্দোলন থেকে উদ্ভূত গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের স্বপ্ন, ঘোষণা ও রূপকল্পের অপূর্ণতা আগস্ট-পরবর্তী সংগ্রামকে অন্য পর্যায়ে টেনে নিয়ে যাবে।’

আমাদের বীর ছাত্ররা এবং আমাদের নাগরিকরা এটা ঘটতে দেবে না বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন চাকমা সার্কেল প্রধান দেবাশীষ রায়।

 

বন্যার্তদের জন্য বাগাছাস-গাসুর ত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি

 


শেরপুর ও ময়মনসিংহে চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে গারো ছাত্র সংগঠনগুলোর উদ্যোগে চলছে ত্রাণ সংগ্রহ কর্মসূচি। ঢাকা, ময়মনসিংহ সহ মান্দি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোতে ত্রাণ সংগ্রহ করছেন সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। একইভাবে অনলাইনে প্রচারণা চালিয়েও ত্রাণ সংগ্রহ করছেন তারা।

ইতোমধ্যে ঝিনাইগাতী-কলমাকান্দার বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছে বাগাছাস। পর্যায়ক্রমে ধোবাউড়া, হালুয়াঘাটের ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হবে বলে জানা গেছে।

রোববার বাংলাদেশ গারো ছাত্র সংগঠন (বাগাছাস) কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক প্যাট্রিক চিসিমের নেতৃত্বে ঢাকার বসুন্ধরা, গুলশান, কালচাঁদপুর, বাড্ডা এলাকায় বক্সে ত্রাণ সংগ্রহ করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এসময় লোকজন স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের সহযোগিতা করে।

বাগাছাসের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক প্যাট্রিক চিসিম বলেন, ‘উজানের ঢলে সৃষ্ট বন্যায় তুলনামূলক সমতল এলাকার মান্দি গ্রামগুলো ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে। যদিও এখনো সেভাবে ক্ষতির পরিমাণ জানা সম্ভব হচ্ছে না। অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। পুকুর ভেসে গেছে। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে অনেক মান্দি পরিবার।’

বাগাছাসের এ নেতা আরও জানান, যাতায়াত খরচ এবং সময়ের কথা বিবেচনা করে ত্রাণের টাকা উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা স্থানীয়ভাবে অ্যারেঞ্জ করে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ পৌঁচ্ছে দিচ্ছে।   

এদিকে, গারো স্টুডেন্ট ইউনিয়নের (গাসু) নেতাকর্মীরাও পাশে দাঁড়িয়েছে বন্যার্তদের। ঢাকার বিভিন্ন চার্চে বক্স হাতে ত্রাণ সংগ্রহে নেমেছেন তারা। এরইমাঝে নালিতাবাড়ি ও ধোবাউড়ায় সংগঠনটি ত্রাণ বিতরণ করেছে।

গাসুর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সতীর্থ চিরান বলেন, এখনো ত্রাণ সংগ্রহ চলমান রয়েছে। অনলাইন কিংবা অফলাইন দুটি মাধ্যমেই ত্রাণ পাঠাতে পারেন।

বন্যার্তদের জন্য গাসুর মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য পাঠাতে—

01610772924 (বিকাশ)

01733455387 (নগদ)

বাগাছাসের মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য পাঠাতে—

01921129770, 01518676274 (বিকাশ)

01866067097, 01518676274 (নগদ)

ব্যাংক একাউন্ট: 1961580020023

ব্যাংকের নাম: Dutch Bangla Bank, Tangail Branch

হিসাবের নাম: Ansang Dalbat

এছাড়াও সংগঠন দুটি শুকনো খাবার, স্যালাইন, বোতলজাত পানি ও বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, স্যানিটারি ন্যাপকিন সহ যে কোন ধরনের সহযোগিতা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে।

ঝিনাইগাতীতে বন্যায় ভেঙে পড়েছে গারোদের ১০০টির বেশি ঘর

 


অতিবৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা উজানের ঢলে সৃষ্ট বন্যায় শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে গারোদের একশোটির বেশি ঘর ভেঙে পড়েছে। রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত শুধুমাত্র গারো জনগোষ্ঠীর ১০০টির বেশি ঘর ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

উপজেলার গারো অধ্যুষিত মরিয়মনগর, দুধনই, ভাটপাড়া, বারোয়ামারী, ধানশাইল, বাঁকাকুড়া, গজারীকুড়া গ্রামের গারো জনগোষ্ঠীর মাটির ঘরগুলো ক্ষতির শিকার হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গ্রামগুলোর মধ্যে বেশি ক্ষয়ক্ষতির শিকার ভাটপাড়া। গ্রামটির ৩৭টি পরিবারের সবগুলো ঘর নুইয়ে পড়েছে। একেকটি পরিবারের ঘরের সংখ্যা দুই থেকে তিনটি। হঠাৎ করে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে অনেক মানুষ পড়েছেন চরম বিপদে। তবে ধসে পড়া ঘরের নিচে চাপা পড়ে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

পার্শ্ববর্তী দুধনই, মরিয়মনগর, গজারীকুড়া, বারোয়ামারীতেও একই চিত্র। বারোয়ামারীর যুথিকা রাকসাম, আধুনিকা ম্রং, বণিকা চিরান, লুটিস চিরান, কবিতা ম্রং, সলিন ম্রং, মহিমা চিরান, নির্দেশ চিরান, আলফন্স চিরান প্রমুখের বাড়ি বন্যার পানিতে একেবারে শুয়ে পড়েছে। এছাড়াও অনেকের ঘর ভেঙেছে আংশিকভাবে। অনেকের পুকুর ডুবে গেছে।

ধানশাইল, বাঁকাকুড়ার প্রায় ১০টি গারো পরিবারের ঘর ধসে পড়েছে। তবে ঘরগুলো ধসে পড়ার আগেই মানুষ ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। এতে মানুষের হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ভাটপাড়ার বাসিন্দা সৌহার্দ্য চিরান বলেন, ‘উজানের ঢলে মাত্র দুই ঘণ্টার ব্যবধানে ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। আমার গ্রামের শুধুমাত্র কয়েকটি পাকা ঘর বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেয়েছে। ঘর হারিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছে আশেপাশের আত্মীয়-স্বজন, পরিচিতজনদের বাড়িতে।’

একই গ্রামের ফুলমনি ম্রং বলেন, ‘আমাদের ঘরবাড়ি সব ভাইঙ্গা নিয়ে গেছে। খাওয়ার সমস্যা হচ্ছে। গত দুইদিন ধরে কোন কিছু খাইতে পারি না। আমরা এখন নিরুপায়।’

ষাটোর্ধ্ব মিটিলা চিসিম বলেন, ‘দুইদিন ধরে খাওয়া-দাওয়া নাই। কাপড়-চোপড় নাই। সব তলায় গ্যাছে। কেউ আঙ্গরে খবর নেয় নাই।’

দুধনই গ্রামের মৃন্ময় চিরান জানান, তাঁর গ্রামের প্রায় ৮-১০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে রাতে অনেকেই তার বাড়িতে আশ্রয় নেন। ঘর হারানো লোকগুলো রীতিমত নির্বাক হয়ে গেছে।

পাহাড়ি নদী মহারশি ও সোমেশ্বরীর পানি বিপদসীমার উর্ধ্বে প্রবাহিত হওয়ায় এ বন্যার সৃষ্টি হয়। শেরপুরের সীমান্তবর্তী উপজেলা ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদীর কমপক্ষে ১৮টি ইউনিয়নের অধিকাংশ রাস্তাঘাট, বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলের মাঠ তলিয়ে গেছে। অসংখ্য বাড়িঘর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

দেশের সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫% আদিবাসী কোটা চালুর দাবি

 


দেশের সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ শতাংশ আদিবাসী কোটা চালু করার দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ (পিসিপি)। আজ ১৭ সেপ্টেম্বর, ৬২তম শিক্ষা দিবস উপলক্ষে সংগঠনটির রাঙ্গামাটি জেলা শাখা আয়োজিত এক সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।  

সমাবেশে পিসিপি, যুব সমিতি, হিল উইমেন্স ফেডারেশন, মহিলা সমিতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কর্মীর পাশাপাশি রাঙ্গামাটি শহরের বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় দেড় হাজারের অধিক ছাত্রছাত্রী অংশগ্রহণ করেন। সমাবেশের আগে কুমার সুমিত রায় জিমনেসিয়াম প্রাঙ্গণ থেকে মিছিল নিয়ে বনরুপার পেট্রোল পাম্প প্রদক্ষিণ করে ডিসি অফিসের সামনে সমবেত হয়।

সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুমিত্র চাকমা বলেন, ১৯৬২ পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খান যে গণবিরোধী বৈষম্যমূলক শিক্ষা নীতি চালু করেছিল সেটা স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও বাংলাদেশে আমরা লক্ষ্য করি। আমরা বারে বারে দেখেছি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতিবাজদের একটা লড়াই প্রতিনিয়ত চলছে। জেলা পরিষদ পুনর্গঠন নয় বরং জেলা পরিষদ পার্বত্য চুক্তি মোতাবেক নির্বাচন দেওয়া হোক।

তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পার্বত্য চুক্তির পূর্ণাঙ্গ ও যথাযথ বাস্তবায়ন করে সকল প্রকার সরকারি চাকুরিতে ও দেশের সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা বহাল রাখার দাবি জানান।

পিসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নিপন ত্রিপুরা বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানে আদিবাসীদের জাতিগত পরিচয় বাঙালি হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আদিবাসীদের উপর দমন পীড়ন জারি রেখেছে উগ্র সাম্প্রদায়িক সরকার। আদিবাসীরা একদিন স্বনির্ভর ছিল। কিন্তু তাদেরকে ক্রমাগতভাবে স্বভূমি থেকে উচ্ছেদ করে, তাদের সম্পত্তি দখল করা হচ্ছে। 

পিসিপি’র কেন্দ্রীয় সভাপতির দাবি, পার্বত্য চট্টগ্রামে শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈষম্য, দুর্নীতি ও অনিয়ম হয় মূলত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে।

হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক উলিচিং মারমা বলেন, পার্বত্য চুক্তি অনুযায়ী অনগ্রসর আদিবাসীদের জন্য শিক্ষা ও চাকরি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেওযার কথা থাকলেও সেটি বাস্তবায়ন করা হয় না। আদিবাসী শিক্ষার্থীরা মৌলিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত। বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থা পাহাড়ে নেই। জেলা পরিষদে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী আদিবাসীদের স্ব স্ব মাতৃভাষায় পাঠদানের ব্যবস্থা করার কথা থাকলে তার বাস্তবে করা হয়নি।

সংহতি বক্তব্যে বিএমএসসি রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মংগ্রি মারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভিন্ন ভাষাভাষী আদিবাসী জনগণ ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। আদিবাসীদের জন্য সকল প্রকার সরকারি চাকুরিতে বরাদ্দ ৫ শতাংশ কোটা ১ শতাংশে নামিয়ে এনে আদিবাসীদের সাথে চরম বৈষম্য করা হয়েছে।

ছাত্রনেতা টিকেল চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির রাঙ্গামাটি জেলা শাখার সভাপতি জিকো চাকমা। তিনি আদিবাসীদের সকল প্রকার সরকারি চাকরিতে ও দেশের সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ শতাংশ কোটা চালু রাখার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

জাতীয় নাগরিক কমিটিতে স্থান পেলেন দুই আদিবাসী প্রতিনিধি

 


নতুন বাংলাদেশের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত সফল করার লক্ষ্যে গঠিত হয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৪টায় ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ৫৫ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে সংগঠনটি।

সংগঠনটির আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। সদস্য সচিব হয়েছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র শক্তির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আখতার হোসেন ও মুখপাত্র হয়েছেন সামান্তা শারমিন।

৫৫ সদস্য বিশিষ্ট গঠিত এ কমিটিতে দুইজন আদিবাসী প্রতিনিধি জায়গা পেয়েছেন। তারা হলেন অলিক মৃ ও সায়ক চাকমা।

অলিক মৃ বাংলাদেশ আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।

এই কমিটি ফ্যাসিবাদের মূল থেকে উচ্ছেদ করে দেশকে পুনরুদ্ধার করার জন্য জন-সংবেদনশীল নীতি প্রণয়ন থেকে শুরু করে বিভিন্ন দিক থেকে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন আহ্বায়ক মুহাম্মাদ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

লিখিত বক্তব্যে মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, অচিরেই সকল মহানগর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অংশগ্রহণকারী সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সাথে আমরা আলোচনা করবো। তৃণমূল পর্যন্ত এ কমিটির বিস্তৃতি ঘটানোর মাধ্যমে আমরা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংহত করে বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাব।

জাতীয় নাগরিক কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- আরিফুল ইসলাম আদীব, সাইফ মোস্তাফিজ, মনিরা শারমিন, নাহিদা সারোয়ার চৌধুরি, সারোয়ার তুষার, মুতাসিম বিল্লাহ, আশরাফ উদ্দিন মাহদি, আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, অনিক রায়, জাবেদ রাসিন, মো. নিজাম উদ্দিন, সাবহানাজ রশীদ দিয়া, প্রাঞ্জল কস্তা, মঈনুল ইসলাম তুহিন, আব্দুল্লাহ আল আমিন, হুযাইফা ইবনে ওমর, শ্রবণা শফিক দীপ্তি, সানজিদা রহমান তুলি, আবু রায়হান খান, মাহমুদা আলম মিতু, সাগুফতা বুশরা মিশমা, সৈয়দ হাসান ইমতিয়াজ, তাসনিম জারা।

এছাড়াও রয়েছেন মোহাম্মদ মিরাজ মিয়া, মো. আজহার উদ্দিন অনিক, মো. মেসবাহ কামাল, আতাউল্লাহ, এস. এম. শাহরিয়ার, মানজুর-আল- মতিন, প্রীতম দাশ, তাজনূভা জাবীন, অর্পিতা শ্যামা দেব, মাজহারুল ইসলাম ফকির, সালেহ উদ্দিন সিফাত, মুশফিক উস সালেহীন, তাহসীন রিয়াজ, হাসান আলী খান, মো. আব্দুল আহাদ, ফয়সাল মাহমুদ শান্ত, মশিউর রহমান, আতিক মুজাহিদ, আবদুল্ল্যাহ আল মামুন ফয়সাল, মো. ফারহাদ আলম ভূঁইয়া, তানজিল মাহমুদ, এস.এম. সুজা, মো. আরিফুর রাহমান, কানেতা ইয়া লাম লাম, সৈয়দা আক্তার, স্বর্ণা আক্তার, সালমান মুহাম্মাদ মুক্তাদির, আকরাম হুসেইন।

ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী সবাই এ দেশের নাগরিক: প্রধান উপদেষ্টা

 


অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, আদিবাসী সবাই এ দেশের নাগরিক এবং সমান আইনের সুরক্ষার অধিকারী। তাদের সকলের মানবিক অধিকারসহ অন্যান্য সকল অধিকার নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এজন্য আমি উপদেষ্টা পদমর্যাদা সম্পন্ন একজন বিশেষ সহকারী নিয়োগ দিয়েছি যার দায়িত্ব হবে জাতীয় সংহতি উন্নয়ন।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেওয়ার পর গতকাল প্রথমবারের মতো জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বিচার বিভাগ, পুলিশ, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন, অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কারের উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

এদিকে, প্রধান উপদেষ্টার আদিবাসী শব্দচয়নে আশার আলো দেখছেন আদিবাসীরা। আদিবাসী যুব ফোরামের সহ-সভাপতি টনি চিরান সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী-উপজাতি শব্দ নিপাত যাক, আদিবাসীরা মুক্তি পাক।'

মং এ ঝাউঝাউ লিখেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার মুখে আদিবাসী শুনে ভালো লাগছে। লিখিতভাবেও হোক আগামীতে।’

জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জোরদারের আহ্বান মাইকেল চাকমার


 

জনগণের হাতে ক্ষমতা আনার, জনগণের সরকার ও সাংবিধানিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সেন্ট্রাল ওয়ার্কিং টিমের সদস্য মাইকেল চাকমা।

শনিবার (২৪ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় তোপখানা রোডের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকার কর্মী-সংগঠকদের এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

গোপন বন্দীশালা আয়না ঘরে ৫ বছর ৩ মাস থাকার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মাইকেল চাকমা বলেন, ‘শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকার উচ্ছেদের ফলেই আমি গুমের মৃত্যু গুহা থেকে জীবন নিয়ে আজ ফিরে আসতে পেরেছি।’

এসময় তিনি ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মান জানান।

সভার শুরুতে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ফলে গত ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের গুমের মৃত্যু গুহা আয়নাঘর থেকে ৫ বছর ৩ মাস বন্দি থেকে ফিরে এসেছেন মাইকেল চাকমা।

এরআগে, গত ৭ আগস্ট আয়না ঘর থেকে মুক্তি পান মাইকেল চাকমা। ওইদিন ভোরের দিকে চট্টগ্রামের একটি স্থানে তাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হয়।

‘সংবিধানের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শব্দ কেটে আদিবাসী শব্দ লিখতে হবে’

 


রাষ্ট্র যখন সংস্কার হবে তখন সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা সর্বত্র সেই সংস্কারের প্রতিফলন থাকতে হবে। সংবিধানে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মতো শব্দ কেটে আদিবাসী শব্দটা লিখতে হবে। বুধবার (২১ আগস্ট) মোহাম্মদপুরের ফোক সেন্টারে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন লেখক ও গবেষক পাভেল পার্থ।

সভায় সাম্প্রতিক বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ এনে তিনি বলেন, এই আন্দোলন মাওলানা ভাসানীর বক্তব্যকে সামনে নিয়ে এসেছে। মনে করিয়ে দিয়েছে রাষ্ট্রের ধর্মীয়করণ সম্ভব নয়।

এই গবেষক আরও বলেন, জনপরিসরে ছাত্র-জনতার ভেতর একটি ভুল ধারণা রয়েছে। ‘আদিবাসী শব্দটির সঙ্গে ‘আদিবাসিন্দা শব্দটিকে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে। বন্ধুদের সঙ্গে এই আলোচনা করা দরকার।

‘আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে যৌথভাবে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, আদিবাসী যুব পরিষদ ও জনউদ্যোগ এ সভার আয়োজন করে। বিভূতিভূষণ মাহাতোর সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ বৃহত্তর ঢাকা কমিটির সভাপতি হরেন্দ্রনাথ সিং। সভায় ধারণাপত্র পাঠ করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক নিরলা মার্ডী।

সান্তাল স্টুডেন্টস ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সুবোধ এম বাস্কে বলেন, পাহাড়-সমতল-চা বাগানে বসবাসরত সব আদিবাসীকে একত্রে এগোতে হবে। সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। একটা আন্দোলন কখনোই বহুমাত্রিক অংশগ্রহণ ছাড়া সফল হয় না।

কাপেং ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক পল্লব চাকমা বলেন, ভয়ের সংস্কৃতির অবসান হয়েছে। সম্প্রতি রাঙ্গামাটিতে আদিবাসীরা বড় বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন। পাহাড় ও আদিবাসী নিয়ে সমাজে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে। যা দুঃখজনক। পাহাড়-সমতল আমরা যত বেশি একত্রিত হতে পারব, তত আমাদের দাবি জোরালো হবে। আমাদের দাবির কথা অন্য কেউ বলে দিলে তা বিকৃত হবে। ‘আদিবাসী শব্দটা জোরেশোরে উচ্চারণ করতে হবে।

পৃথক নয়, পাহাড় ও সমতলের আদিবাসীদের জন্য ১টি মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি

 


সমতল ও পাহাড়ের আদিবাসীদের জন্য পৃথক পৃথক নয়, বরং একটি আদিবাসী মন্ত্রণালয় গঠন করে সংবেদনশীল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় দৃষ্টান্ত তৈরি করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দেশের বিশিষ্টজনেরা জানিয়েছেন এমন দাবি।

রোববার আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত সেমিনারে তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম, জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, এএলআরডি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, ব্লাস্ট, নিজেরা করি, বেলা, আরবান, কাপেং ফাউন্ডেশন, আইপিডিএস, সিসিডিবি, কারিতাস-বাংলাদেশ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনসহ ১৪টি সমমনা ও অধিকারভিত্তিক সংস্থা যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে।

সেমিনারে পল্লব চাকমা, অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান সুমন ও ফাল্গুনী ত্রিপুরা তিনটি পৃথক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এতে প্যানেল আলোচক হিসেবে ড. ইফতেখারুজ্জামান, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, ব্যারিস্টার সারা হোসেন, আদিবাসী নেত্রী বিচিত্রা তির্কী এবং এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা উপস্থিত ছিলেন।

প্রবন্ধ উপস্থাপকরা পাহাড় ও সমতলের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক স্বীকৃতি, ভূমি থেকে উচ্ছেদ, আদিবাসীদের জীবননাশ, দেশান্তর হতে বাধ্য করাসহ সম্পত্তিতে নারীর অধিকারের বিষয়টিতে গুরুত্ব আরোপ করেন। তারা এতে আদিবাসী মন্ত্রণালয় এবং ভূমি কমিশন গঠনের দাবি জানান। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে পার্বত্য তিন জেলা থেকে সামরিক শাসনের অবসান প্রত্যাশা করেন।

কাল আদিবাসী দিবস পালন করবে না আদিবাসী ফোরাম

 


দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামীকাল (৯ আগস্ট) আদিবাসী দিবস পালনের সমস্ত কর্মসূচি স্থগিত করেছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম।

সংগঠনটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক হিরণ মিত্র চাকমা স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৯ আগস্টের সকল অনুষ্ঠান স্থগিত করা হল। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া সাপেক্ষে পরবর্তীতে দিবসটি পালনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।

জাতিসংঘের এবারের আদিবাসী দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় Protecting the Rights of Indigenous Peoples in Voluntary Isolation and Initial Contact. যার বাংলা অনুবাদ করা হয়, ‘আদিবাসীদের অস্তিত্ব সংরক্ষণ ও মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নিজেকে অধিকতর সামিল করুন।’

জাতিসংঘ ১৯৯৪ সালে ৯ আগস্টকে বিশ্ব আদিবাসী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মতো বাংলাদেশের আদিবাসীরাও বিভিন্ন দাবি-দাওয়া, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি পালন করে আসছে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা হলেন সুপ্রদীপ চাকমা


নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে ১৭ সদস্যের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) রাত ৯টায় বঙ্গভবনে তারা শপথ নেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত সুপ্রদীপ চাকমা। ঢাকার বাইরে অবস্থান করায় তিনি শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেননি।

সুপ্রদীপ চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে কর্তব্যরত ছিলেন। ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

১৯৬১ সালে খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে সুপ্রদীপ চাকমার জন্ম। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি সপ্তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। এরপর মেক্সিকো ও ভিয়েতনামে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।  

সুপ্রদীপ চাকমা ছাড়াও উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, মানবাধিকারকর্মী আদিলুর রহমান খান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হাসান আরিফ, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন, পরিবেশ আইনবিদ সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম, আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

এছাড়াও রয়েছেন ফরিদা আখতার, বিধান রঞ্জন রায়, আ ফ ম খালিদ হাসান, নুরজাহান বেগম, শারমিন মুরশিদ ও ফারুকী আযম।

আয়নাঘর থেকে মাইকেল চাকমা মুক্ত, কল্পনা চাকমা কোথায়–প্রশ্ন

 


গোপন বন্দীশালা আয়নাঘর থেকে ইউপিডিএফ নেতা মাইকেল চাকমার মুক্তির পর কল্পনা চাকমাকে নিয়ে সরব হয়েছেন সচেতন নাগরিকেরা। এই রাজনৈতিকর্মী কোথায়তুলছেন সেই প্রশ্ন।

এ নিয়ে নিপ্পন চাকমার একটি লেখা ফেইসবুকে সয়লাব হয়ে গিয়েছে। তিনি লিখেছেন, আঁধাপাকা চুল, একটু বয়সের ছাপ, বয়সটা গত ২৮ বছরে অনেকখানি হয়েছে ‘কল্পনা চাকমা’ নামে এমন কোনো ভদ্রমহিলাকেও যদি পাওয়া যেতো পাহাড় আজ কিছুটা হলেও আনন্দে কেঁদে উঠতো!

হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী কল্পনা চাকমাকে নিয়ে সরব হয়েছেন সাংবাদিক ও অ্যাক্টিভিস্ট হোসেইন সোহেল। তিনি বলেন, মাইকেল চাকমাকে পেলাম আয়নাঘর থেকে। পেলাম আরও ভাইদের কিন্তু আমাদের পার্বত্য জেলার কল্পনা চাকমা কই? তাকে ফেরত দিন দয়া করে।

একইসাথে যারা প্রতিবাদহীন চুপ রয়েছেন তাদেরও সমালোচনা করেছেন তিনি। হোসেন সোহেল লিখেছেন, পাহাড়ের ভ্লগার ভয়েজার ইউটিউবার ইত্যাদি তারা কোন কথা বলছেন না কেন? বর্তমান সময় নিয়ে ভয়ে লেপের তলে ঘুমিয়ে থাকবেন?

গারো জাতিসত্তার কবি ও লেখক নিগূঢ় ম্রং বলেন, অনেকেরই তো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে। আয়নাঘর ভেঙে দেখো, কল্পনা চাকমা কথা বলছে!

প্রতিবাদী গানের দল মাদল-এর অন্যতম সদস্য অন্তর স্কু নিজের ফেইসবুক ওয়ালে লিখেছেন, মাইকেল চাকমাকে পাওয়া গেলো আয়নাঘর থেকে। কল্পনা চাকমা কি ফিরবেন?

রাজনৈতিককর্মী কল্পনা চাকমা ১৯৯৬ সালের ১২ জুন রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে পরিবারের সদস্যদের সামনে অপহৃত হন। তিনি হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

পরিবারের সদস্যদের স্পষ্ট অভিযোগ, সেই রাতে কল্পনাকে নিরাপত্তা বাহিনীর লেফটেন্যান্ট পদধারী একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ মামলার বাদী কালিন্দী কুমার চাকমা তাঁর জবানবন্দিতেও সেই একই অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। দীর্ঘ ২৮ বছর পর চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল রাঙ্গামাটির আদালত অপহরণের মামলাটি খারিজ করে দেয়।

‘আদিবাসী-সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেই গঠিত হবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’

 

নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি, শিক্ষক, ছাত্র প্রতিনিধি, সংখ্যালঘু, আদিবাসী আলেম সমাজের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার ( আগস্ট) সকালে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে এ তথ্য জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ।

এর আগে, প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতিবৃন্দের পদত্যাগ দাবি করেন আসিফ মাহমুদ। 

বুধবার দিবাগত রাতে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, বিচারবিভাগে এখনো আগের সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করা বিচারপতিরা বিচরণ করছেন। আমরা শুনতে পেলাম, অভ্যুত্থানের আগে আমাদের যেভাবে আদালতের নামে টালবাহানা করা হতো, ঠিক একই কায়দায় অভ্যুত্থান পরবর্তী ছাত্র-জনতার সরকার ব্যাহত করার প্রচেষ্টা চলমান।

এই ছাত্রনেতা অচিরেই প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের বিচারপতিবৃন্দের অপসারণ দাবি করেন।

 

‘আদিবাসী-সংখ্যালঘুদের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে’

 

আদিবাসী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগনের মনে আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করছে। রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর জেলায় আদিবাসীদের উপর হামলা, স্থাপনা ভাংচুর, সম্পদ লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ।

মঙ্গলবার সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি বিচিত্রা তির্কী ও সাধারণ সম্পাদক নরেন চন্দ্র পাহান এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।

আদিবাসী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগণের জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় সচেতন জনগণকে পাশে দাঁড়াতে আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। সেই সঙ্গে আদিবাসী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়।

ছাত্র জনতার ঐক্যবদ্ধ গণঅভ্যুত্থান ও আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনকে মুক্তিকামী জনগণের বিজয় বলে উল্লেখ করেছে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ।

আয়নাঘর থেকে মুক্ত হলেন মাইকেল চাকমা


গুমের শিকার হওয়া ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) নেতা মাইকেল চাকমা দীর্ঘ বছর মাস পর অবরুদ্ধদশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন। বুধবার ভোরের দিকে চট্টগ্রামের একটি স্থানে তাকে চোখ বাঁধা অবস্থায় ছেড়ে দেয়া হয়।

এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ইউপিডিএফ।

২০১৯ সালের এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকা থেকে সাংগঠনিক কাজ শেষে ঢাকায় ফেরার পথে মাইকেল চাকমা গুমের শিকার হন। এরপর থেকে তাঁর কোন হদিস মেলেনি।

মাইকেল চাকমাকে উদ্ধার মুক্তির দাবিতে ইউপিডিএফ তার সহযোগী সংগঠনসমূহ, প্রগতিশীল মানবাধিকার সংগঠন, শিক্ষক-নাগরিক সমাজসহ পরিবারের লোকজন নানা কর্মসূচি পালন করেছেন।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, সিএইচটি কমিশনসহ মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা ব্যক্তিগণও মাইকেল চাকমা গুমের উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁর সন্ধান দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন।

সংশ্লিষ্ট নারায়ণগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের মাইকেল চাকমার সন্ধান চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করা হলেও এতদিন সরকারের পক্ষ থেকে তাকে উদ্ধারে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর তাকে মুক্তি দেওয়া হলো।

ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি নুতন কুমার চাকমা এক বিবৃতিতে মাইকেল চাকমাকে মুক্তি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নির্দেশে মাইকেল চাকমাকে তুলে নিয়ে দীর্ঘ বছরের অধিক বন্দী করে রাখে। তিনি এই গুমের সাথে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান।

তিনি মাইকেল চাকমার সন্ধান তাকে উদ্ধারের দাবিতে যেসব সংগঠন ব্যক্তি সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করেছেন, প্রতিবাদসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছেন সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

© all rights reserved - Janajatir Kantho