খেলাধুলা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
খেলাধুলা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

জাতীয় টেবিল টেনিসে আলো ছড়ানো তরুণ তু্র্কি রামহিম বম

রামহিম বম

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের প্রত্যন্ত এলাকা রুমার বগা লেক থেকে উঠে এসে জাতীয় পর্যায়ে আলো ছড়াচ্ছেন রামহিম বম। ইতোমধ্যেই হয়েছেন দেশসেরা টেবিল টেনিস খেলোয়াড়। আন্তর্জাতিক টিটিতে বাংলাদেশের একমাত্র সোনা জয়েও আছে এ পাহাড়ি তরুণ তুর্কির বড় অবদান।

জাতীয় পর্যায়ে জিতে চলেছেন একের পর এক পুরষ্কার। অতি সম্প্রতি জয় করে নিয়েছেন কুল বিএসপিএ স্পোর্টস এওয়ার্ড-২০২৩ এর বর্ষসেরা টেবিল টেনিস খেলোয়াড়ের পদক। এছাড়াও উদীয়মান এ টেনিস তারকার অর্জনের ঝুড়িতে রয়েছে আরো অনেক জাতীয় পুরষ্কার এবং আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশগ্রহন ও দেশকে প্রতিনিধিত্ব করার অভিজ্ঞতা।

বাংলাদেশের টিটি-সম্পৃক্ত অনেকেই রামহিমকে বাংলাদেশের মা লং বলে ডাকেন। মা লং হচ্ছেন চীনের বিখ্যাত টিটি খেলোয়াড়।

টেবিল টেনিসে রামহিমের হাতেখড়ি তৃতীয় শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়েই। স্কুলে শুরুর সময় প্রশিক্ষণে সহায়তা করেছেন বাংলাদেশ টেবিল টেনিসের জাতীয় কোচ হাফিজুর রহমান ও ফেডারেশন সদস্য এনায়েত হোসেন। ২০১৬ সালে ঢাকায় আসেন উত্তর কোরিয়ান টিটি কোচ কিম সুং হ্যান ও প্রশিক্ষণ সহযোগী কিম সুগান। তাঁদের দুজনকে বিকেএসপির পাশাপাশি কোয়ান্টাম স্কুলেও পাঠানো হয়। বিদেশি প্রশিক্ষকের দেওয়া প্রশিক্ষণের সুফলও মেলে দুই বছর যেতে না যেতেই। ২০১৮ সালে বিকেএসপি কাপে চ্যাম্পিয়ন হন রামহিম। তখন অনেকের নজরে আসেন তিনি।

২০২০ সালে এসএসসি পাস করে ঢাকায় চলে আসেন রামহিম লিয়ান বম। বাংলাদেশ পুলিশের টিটি দলে নাম লেখান। করোনা শেষে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় বসে প্রিমিয়ার টেবিল টেনিস লিগ। সেখানে রানার্স আপ হয় রামহিমের দল। একই বছর এপ্রিলে বাংলাদেশ গেমস টিটিতে ছেলেদের দলগত সোনা জেতে পুলিশ। সেখানেও ভালো খেলেন রামহিম। ফেডারেশন কাপ টিটিতেও ভালো খেলেছেন। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে বাংলাদেশ জাতীয় টেবিল টেনিস দলে সুযোগ পান। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর খেলোয়াড়দের মধ্যে তিনিই প্রথম টেবিল টেনিসে জাতীয় দলে যুক্ত হন।  

জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েই নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। ৩৯ তম জাতীয় সিনিয়র টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৩ এ পুরুষ এককে চ্যাম্পিয়ন, বালক এককে চ্যাম্পিয়ন এবং মিক্স ডাবলস এ রানার্স আপ পুরষ্কার অর্জন করেন। ফেডারেশন কাপ-২০২১ এ পুরুষ এককে রানার্স আপ এবং পুরুষ দলগত বিভাগে হন চ্যাম্পিয়ন। নবম বাংলাদেশ গেমস-২০২১ এ পুরুষ দলগত বিভাগে গোল্ড মেডেল অর্জন করেন।

এতো অর্জনের পরেও এখানেই থেমে যেতে চান না এ উদীয়মান টেনিস তারকা। আরো সামনে এগিয়ে যেতে চান। সেজন্য নিয়মিত করে যাচ্ছেন কঠোর অনুশীলন। 

বক্সিংয়ের র‌্যাঙ্কিংয়ে ৬০০ ধাপ ওপরে উঠে এলেন সুরোকৃষ্ণ চাকমা

বক্সিংয়ের র‌্যাঙ্কিংয়ে ৬০০ ধাপ ওপরে উঠে এলেন সুরোকৃষ্ণ চাকমা
সুরোকৃষ্ণ চাকমা। ছবি: সংগৃহীত

পরপর দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ জেতার কারণে বক্সারদের র‍্যাঙ্কিংয়ে বড় ধরনের উন্নতি হয়েছে সুরোকৃষ্ণ চাকমার। সর্বশেষ চলতি বছর থাইল্যান্ড ও ভারতের বক্সারকে হারিয়ে এক লাফে পেশাদার বক্সিংয়ের র‌্যাঙ্কিংয়ে ৬০০ ধাপ ওপরে উঠে এসেছেন তিনি।

সুখবরটি সুরো নিজেই তার ফেসবুকে জানিয়েছেন। উচ্ছ্বসিত সুরো লিখেছেন, 'একটা ভালো খবর শেয়ার করি সবার সাথে। গত দুইটি আন্তর্জাতিক খেলা পর পর জেতার কারণে আমার বিশ্ব র‍্যাঙ্কিং ৮০০ থেকে ২০০-তে চলে আসছে। সবার আশীর্বাদ, দোয়া, ভালোবাসা এবং আমি যদি সুস্থ থাকি সামনে আরও ভালো কিছু হবে আশা করছি।' 

এখন পর্যন্ত আটটি ম্যাচ খেলে সবগুলোতেই জিতেছেন এ বক্সার।

এর আগে ৮০০ এর ঘরে ছিল সুরোকৃষ্ণ চাকমার র‍্যাঙ্কিং। তার বর্তমান র‍্যাঙ্কিং ২২৪। এই তালিকা মূলত লাইটওয়েট বক্সারদের। যেখানে মোট ২২৮৩ জন পেশাদার বক্সার রয়েছেন সারা বিশ্বে। তাদের মধ্যেই সুরোকৃষ্ণ চাকমার অবস্থান বর্তমানে ২২৪ নাম্বারে। 

সুরোকৃষ্ণ চাকমার পরবর্তী বক্সিং ম্যাচ ২৫ মে, ঢাকায়। প্রতিপক্ষ চীনের একজন বক্সার। সেই লড়াইয়ের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে শুরু করে দিয়েছেন তিনি। 

থুইনুই মারমা যোগ হচ্ছেন বাফুফের চুক্তিতে

থুইনুই মারমা

গেল সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ ও সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্টে চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স দেখিয়ে ৬ জন নারী ফুটবলার জায়গা করে নিচ্ছেন বাফুফের বেতনের আওতায়। বয়সভিত্তিক সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ মাতিয়ে যারা বাফুফের বেতনের তালিকায় জায়গা করে নিচ্ছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন থুইনুই মারমা।

বাকি পাঁচজন হলেন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মোসাম্মাৎ সাগরিকা, মুনকি আক্তার এবং অনূর্ধ্ব-১৬ দলের ইয়ারজান বেগম, অপির্তা বিশ্বাস, সুরভী আকন্দ প্রীতি।

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির মেয়ে থুইনুই মারমা। লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়িয়ে উঁচিয়ে ধরেছেন সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা। ভুটান ও ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে টাইব্রেকারে জালে বল পাঠিয়েছিলেন এ কিশোরী।

ঈদের ছুটি কাটিয়ে মেয়েরা ক্যাম্পে ফেরার পর নতুন ৬ জনের সঙ্গে চুক্তি করবে বাফুফে। আর পুরনো যারা থাকবেন তাদের চুক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নবায়ন হয়ে যাবে। তবে শুধু ক্যাটাগরি পরিবর্তন হবে কারো কারো।

জানা গেছে, নতুন চুক্তিতে মোট ৩৫ জন ফুটবলার যুক্ত হচ্ছেন। খেলোয়াড় বাড়লেও টাকার পরিমাণ থাকবে আগের মতোই। তবে ক্যাটাগরি বাড়বে। আগে তিন ক্যাটাগরিতে ৩০ জন ফুটবলার বেতন পেয়েছেন। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে সর্বোচ্চ বেতন ছিল ৫০ হাজার এবং ‘সি’ ক্যাটাগরিতে সর্বনিম্ন বেতন ১৫ হাজার টাকা। ‘বি’ ক্যাটাগরির বেতন ৩০ হাজার টাকা।

নতুন চুক্তিতে ক্যাটাগরি বাড়তে পারে জানিয়ে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার বলেন, ‘আগে মোট যে টাকা দেওয়া হয়েছিল, এবারের পরিমাণ সে রকমই থাকছে। ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা বেতন পাবেন মেয়েরা। ১০ এবং ২০ বা ২২ হাজার টাকার আরো দুটি ক্যাটাগরিও থাকতে পারে।’

এ ক্যাটাগরি অর্থাৎ ৫০ হাজার টাকা করে বেতন পাচ্ছেন সাবিনা খাতুন, রুপনা চাকমা, মাসুরা পারভীন, শামসুন্নাহার, শিউলি আজিম, নিলুফার ইয়াসমিন, আনাই মোগিনি, মারিয়া মান্দা, মনিকা চাকমা, শামসুন্নাহার জুনিয়র, ঋতুপর্ণা চাকমা, সানজিদা আক্তার, মার্জিয়া, কৃঞ্চারানী সরকার, তহুরা খাতুন।

বি ক্যাটাগরি অর্থাৎ ৩০ হাজার টাকা করে পাচ্ছেন সোহাগি কিসকু, স্বপ্না রানী, আফঈদা খন্দকার, শাহেদা আক্তার, স্বর্না রানী মন্ডল, আকলিমা খাতুন, সুরমা জান্নাত, সাথী বিশ্বাস, সাতসুশিমা সুমাইয়া, হালিমা আক্তার, কোহাতি কিসকু, নাসরিন আক্তার, ইতি খাতুন এবং ১৫ হাজার টাকা করে মিস রুপা ও আইরিন খাতুন।

তবে সামনের চুক্তিতে পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে কারো কারো ক্যাটাগরি পরিবর্তন হবে। কেউ নিচের ক্যাটাগরিতে চলে যাবেন, কেউ ওপরে উঠবেন। 

পাওয়ার হিটিংয়ে টাইগারদের দুর্বলতা, পাহাড়ি ক্রিকেটার চায় বিসিবি

পাহাড়ি ক্রিকেটার চায় বিসিবি

দেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে উঠে আসা অ্যাথলেট কিংবা খেলোয়াড়েরা ফুটবল, রেসলিং, হ্যান্ডবল, কাবাডিতে বেশ নাম করলেও ক্রিকেটের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একেবারেই ভিন্ন। পাহাড়ি দুর্গম এলাকা থেকে উঠে আসা ক্রিকেটার নেই বললেই চলে। তবে এবার ক্রিকেটেও আদিবাসী জনগোষ্ঠীদের আগ্রহী করতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

পাহাড়ে বসবাসরত মানুষদের ক্রিকেটের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করতে রাঙামাটিতে ভেন্যু সংস্কার ও আগামী বছর থেকে ন্যাশনাল ক্রিকেট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে বিসিবি। এজন্য অতি সম্প্রতি সেখানে পর্যবেক্ষণে গেছেন বিসিবির টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি।

বিষয়টি নিয়ে ববি গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘রাঙামাটিতে আগে থেকেই স্টেডিয়াম ছিল। কিন্তু চিন্তাভাবনা করছি সেখানে আগামী বছর একটা ভেন্যু করব ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য। এখানে পাহাড়ি যে জনগোষ্ঠী আছে, তাদের ক্রিকেটের সঙ্গে সম্পৃক্ততা খুব কম। ফুটবলে কিন্তু অনেক আছে। ক্রিকেটে কিন্তু সে রকম নেই। একটা জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য এ চিন্তা-ভাবনা। সেখানে খেলা হলে অনেকে আগ্রহী হবে, পরে আমরা বিভিন্ন ধাপে যেতে পারব।’

ক্রিকেটে পাহাড়িদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে দেশের প্রথমসারির একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, পাওয়ার হিটিংয়ে টাইগার ব্যাটাররা বেশ পিছিয়ে রয়েছেন। ভবিষৎতে দুর্বলতা কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেই নেওয়া হয়েছে নতুন পরিকল্পনা।

বিসিবির টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আহমেদ সাজ্জাদুল আলম জানান, পাহাড়ি অঞ্চলে যারা বড় হয়ে উঠেন তাদের একটা কঠোর দৈনন্দিন জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। সেইখান থেকে তারা শারীরিকভাবে এগিয়ে থাকে। তাছাড়া আদিবাসীরা এ দেশের সন্তান, তারা এ দেশের নাগরিক; তাদের আমাদের সম্পৃক্ততা করাটা মনে করি জাতীয় দায়িত্ব। 

আইসিসির আম্পায়ারিং ডেভেলপমেন্ট প্যানেলে চম্পা চাকমা

চম্পা চাকমা

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এর আম্পায়ারিং ডেভেলপমেন্ট প্যানেলে নিজের নাম লিখে কীর্তি গড়লেন রাঙ্গামাটির চম্পা চাকমা। এবার বাংলাদেশী যে চারজন নারীকে আইসিসি তাদের আম্পায়ারিং ডেভেলপমেন্টে যুক্ত করেছেন সেই চারজনের একজন তিনি।

শনিবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার আহমেদ মিঠু গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

চম্পা চাকমা ছাড়াও বাকি তিনজন হলেন সাথিরা জাকির, রোকেয়া সুলতানা, ডলি রানী।

এছাড়াও আইসিসি ম্যাচ রেফারিদের আন্তর্জাতিক প্যানেলে ম্যাচ রেফারি সুপ্রিয়া রানী সুযোগ পেয়েছেন।

আইসিসির আম্পায়ারিং ডেভেলপমেন্ট প্যানেলে জায়গা করে নেওয়া আম্পায়ার চম্পা বলেন, ‘আমি অনেক গর্বিত। কঠোর পরিশ্রম করেছি। সবাইকে ধন্যবাদ। এমনিতে সরকারি চাকরি করি পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অধীন। সেখানেও সহায়তা পেয়েছি। বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ম্যাচ করা। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

রাঙ্গামা‌টি সদ‌রের সাপছ‌ড়ি ইউনিয়‌নের বাসিন্দা চম্পা চাকমা। সর্বশেষ ২০১৭ সালে গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের জার্সিতে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন। রাঙ্গামাটির ৩০ বছর বয়সী জাতীয় দলের সাবেক এই বাঁহাতি স্পিনার আম্পায়ারিংয়ের মাধ্যমে ক্রিকেটের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। 

বাবা-মাকে বড় ঘর বানিয়ে দিতে চান সাফজয়ী থুইনুই

থুইনুই মারমা

পার্বত্য জেলা রাঙামাটির মেয়ে থুইনুই মারমা। লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়িয়ে উঁচিয়ে ধরেছেন সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা। ভুটান ও ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে টাইব্রেকারে জালে বল পাঠিয়েছিলেন এ কিশোরী। তবে এখানেই থেমে যেতে চান না এই পাহাড়ি কন্যা। এগিয়ে যাওয়ার পথে স্বপ্নপূরণের সঙ্গে মা-বাবার স্বপ্নটাও পূরণ করতে চান।

নেপালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য মাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নেননি থুইনুই। পরীক্ষার হলে বসতে না পারার আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন হয়ে। বলেছেন, ‘ফাইনাল ম্যাচটা আসলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমেছিলাম। চিন্তাভাবনা ছিল শিরোপা জিতে দেশে ফিরব। আসলে শেষ মুহূর্তে যখন বাঁশিটা দিল, তখন অনুভূতিটা ছিল অন্যরকম। কারণ আমি এসএসসি পরীক্ষা দেইনি। দেশের হয়ে খেলবো বলে।’

‘যখন শেষ মুহূর্তের বাঁশিটা বাজলো তখন দেশের কথা, মা-বাবার কথাই সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছিল। আমি যে পরীক্ষাটা দিতে পারিনি, সেই আক্ষেপটাও ভুলে গিয়েছিলাম। মনে হয়েছে সেটারই ফল পেয়ে গেছি। আফসোস হতো যদি চ্যাম্পিয়ন না হতাম। সেদিক থেকে এখন আর কোনো আফসোস নেই, কারণ এসএসসি পরীক্ষা না দিলেও দেশকে কিছু একটা দিতে পেরেছি।’

পরিবার সম্পর্কে থুইনুই বলেছেন, ‘আমরা তিন বোন, দুই ভাই। আমার বাবা কৃষিকাজ করেন, আর মা বাসায় কাজ করেন। আমার ভাই পড়ালেখা শেষ করেছে, তবে বাসাতেই থাকে। আর বড় দিদির বিয়ে হয়েছে, তিনিও আমাদের সঙ্গেই থাকেন।’

ফুটবলার হওয়ার পেছনেও রয়েছে পরিবারের অবদান। এ নিয়ে থুইনুই জানান, ‘আমার মা-বাবা আমাকে ছোটবেলা থেকেই উৎসাহ দিতেন খেলাধুলার প্রতি। আমাকে এমনও বলতেন যে, লোকে যা বলে বলুক তাতে কিছুই যায় আসে না। মূলত ২০১৮ সাল থেকে আমার খেলাধুলা শুরু হয়।’

‘আমার মা-বাবার জন্য ভবিষ্যতে অনেককিছুই করতে চাই। নিজের স্বপ্নপূরণ করতে চাই। এরমধ্যে একটা স্বপ্ন হচ্ছে নিজের মা-বাবাকে বড় একটি ঘর বানিয়ে দিতে চাই। কারণ আমাদের ঘরটা তেমন ভালো নয়।’

সামনেই আসছে মারমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব সাংগ্রাই। এ উপলক্ষে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন থুইনুই। উৎসবমুখর এই সময়টাতে মা-বাবার সঙ্গে থাকতে চান সাফজয়ী এই পাহাড়ি কন্যা। 

সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল দলে খেলছেন সাথী মুন্ডা

সাথী মুন্ডা

লাল সবুজের জার্সি গায়ে দিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল দলের হয়ে খেলছেন মুন্ডা জনজাতির মেয়ে সাথী মুন্ডা। প্রচন্ড দারিদ্রের মধ্যে বড় হওয়া এ কিশোরী এখন শুধু পরিবার নয়, বরং প্রতিনিধিত্ব করছেন সমগ্র দেশের প্রতিনিধিত্ব।

অস্তিত্ব সংকটে থাকা মুন্ডা জনজাতির একজন সদস্য হয়েও শ্যামনগর উপকূলের সাথীর হাতে এখন লাল সবুজের পাতাকা। যা স্বাভাবিকভাবেই গর্ব করেছে আদিবাসীদের।

আজ বিকেলে নেপালের মাটিতে বাংলাদেশ জাতীয় দলের নারী ফুটবল দল অনূর্ধ্ব-১৬ দলের হয়ে লড়েছেন পনেরো বছরের এ কিশোরী।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালীনি এলাকার প্রদীপ মুন্ডা ও প্রতিমা মুন্ডার মেয়ে তিনি। বর্তমানে বিকেএসপিতে ৮ম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত এ কিশোরী স্থানীয় বুড়িগোয়ালীনি ফরেস্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে দু’বছর আগে বিকেএসপিতে পাড়ি জমায়।

সাথীর পিতা প্রদীপ মুন্ডা জানান, মেয়ের অর্জনে তারা শুধুমাত্র পরিবার না, বরং গোটা মুন্ডা জাতি ও এলাকাবাসী দারুণ খুশি।

সাথীর মা প্রতিমা মুন্ডা জানান, অভাবের কারণে তারা স্বামী-স্ত্রী কাজের জন্য দিনের বেশিরভাগ সময় বাড়ির বাইরে থাকেন। সে সুযোগে স্কুল ফাঁকি দিয়ে সাথী স্থানীয় বিজি কলেজ মাঠে ফুটবল খেলতেন। এক পর্যায়ে স্থানীয় প্রশিক্ষক মাসুম বিল্লাহর চোখে পড়লে তিনি সাথীর দায়িত্ব নেন। প্রায় দু’বছর প্রশিক্ষণের পর বিকেএসপিতে সুযোগ মিলে যাওয়ায় তারা রীতিমত বিস্মিত হন। এখন মেয়ে দেশের জার্সি গায়ে চড়িয়ে মাঠে নামছেন জেনে আনন্দে ভাসা হারিয়ে ফেলছেন।

সাথীর প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালনকারী মাসুম বিল্লাহ জানান, ২০২৩ সালে সাথী অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে দেশের হয়ে ভারতের সুব্রত কাপে খেলেছে। দেশের হয়ে দ্বিতীয়বারের মত বিদেশ সফরের অংশ হিসেবে বর্তমানে সে নেপালে রয়েছে।

এদিকে, বাবা প্রদীপ মুন্ডা দেশের সকল মানুষের কাছে মেয়ে সাথীর জন‍্য দোয়া ও আর্শিবাদ চেয়েছেন।

ভারতীয় বক্সারকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন সুরো কৃষ্ণ চাকমা

সুরো কৃষ্ণ চাকমা

জনজাতির কণ্ঠ ডেস্ক: রাজধানীর কামাল আতাতুর্ক পার্কে শনিবার রাতে অনুষ্ঠিত হয় পেশাদার বক্সিংয়ের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ‘পাথ টু গ্লোরি হাসল ইন ঢাকা স্কয়ার’। আর এ প্রতিযোগিতায় ভারতের শক্তিশালী বক্সার সন্দ্বীপ কুমারকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সুরো কৃষ্ণ চাকমা। 

এদিন রাতের শেষ ইভেন্টে লড়েছেন সুরো কৃষ্ণ ও সন্দ্বীপ। ৮ রাউন্ডের লাইটওয়েট ক্যাটাগরিতে সুরো কৃষ্ণের কাছে পাত্তা পাননি ভারতের বক্সার সন্দ্বীপ। ৮ রাউন্ডে জেতার কারণে এবার ১০ রাউন্ডের লড়াইয়ে নামতে পারবেন বাংলাদেশের এই বক্সার।

সেখানে জেতাই এখন লক্ষ্য জানিয়ে সুরো কৃষ্ণ বলেন, ‘খেতাবের লড়াইয়ের জন্য লড়তে পারব এবার। সামনেই ডব্লিউবিসি (ওয়ার্ল্ড বক্সিং কাউন্সিল) চ্যাম্পিয়নশিপ রয়েছে। যে লড়াইয়ে খেলেছেন মোহাম্মদ আলী, মাইক টাইসনের মতো বক্সাররা। এবার আমি সেই প্রতিযোগিতায় খেলতে পারব। এটা শুধু আমার জন্য না পুরো বাংলাদেশের জন্যই ইতিহাস।’

আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ভারতীয় বক্সারকে হারানোর পর বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা গায়ে জড়িয়ে নেন সুরো কৃষ্ণ। এ সময় বাংলাদেশের প্রো বক্সিং ফাউন্ডেশনের সভাপতি আদনান হারুন মঞ্চে উঠে তাকে অভিনন্দন জানান।

সবশেষ গত জানুয়ারি মাসে ব্যাংককে জিতেছেন সুরো কৃষ্ণ। ডেঙ্গুতে অনেকদিন অসুস্থ থাকার পর এবার আবারো জিতলেন ঢাকায়। অসুস্থতা কাটিয়ে টানা দুই প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হতে পেরে উচ্ছ্বসিত রাঙামাটির এই বক্সার। 

© all rights reserved - Janajatir Kantho