বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন বিদ্যমান। এরপর আশির দশকে অপারেশন দাবানল নামে সেনাশাসন ছিল। ১৯৯৭ সালে পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর সে সেনাশাসন অপারেশন উত্তরণ নামে বিদ্যমান আছে।
বৃহস্পতিবার রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের এনেক্স ভবনের সম্মেলন কক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আয়োজিত ‘বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় যুব সমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় (সন্তু) লারমা।
সন্তু লারমা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে জাতিগত বৈষম্য বিরাজমান। দেশের শাসকগোষ্ঠী পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীদের বিশ্বাস করে না। ধর্মীয় এবং সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন। এখানকার মানুষদের সঙ্গে যুগ যুগ ধরে বৈষম্য করা হয়েছে। এখনো সেই বৈষম্য বিদ্যমান। এই বৈষম্য দূর করতে যুবসমাজকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।’
সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চাকমা সার্কেল চিফ ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়। তিনি বলেন, ‘কৃত্রিম সংকট তৈরি করে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি করা হয়। প্রকৃত অর্থে পাহাড়ের স্থায়ী বাঙালিদের সঙ্গে পাহাড়িদের কোনো বিরোধ নেই। আদিবাসী মানে বাঙালি মাইনাস নয়, এ ভুল ভাঙতে হবে। এ বিরোধ যেন না থাকে সে জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জনসংখ্যা অনুপাতের হিসাব দেখিয়ে একটি অংশ দাবি তুলেছে, জেলা পরিষদ আইন, ভূমি কমিশন আইন পরিবর্তন করতে হবে। সেখানে বাঙালি ভাইস চেয়ারম্যান দাবি করা হচ্ছে।’
একে তামাশা উল্লেখ করে রাজা বলেন, ‘তা যদি হয় তাহলে ডিসি যদি বাঙালি হয়, তাহলে এডিসি পাহাড়ি, ব্রিগেড কমান্ডার বাঙালি হলে কমান্ডিং অফিসার পাহাড়ি হবে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র কি কাজটা করবে?’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে বৈষম্য জারি রাখা হয়েছে। বিদেশ থেকে কোনো রাষ্ট্রদূত রাঙামাটিতে আসলে আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে দেওয়া হয় না। রাজবাড়ীতে যেতে পারেন না এসব অতিথি।’
সেমিনারে বিশেষ আলোচক ছিলেন রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার। এছাড়াও আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং মারমা, শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা, প্রভাষক আনন্দ জ্যোতি চাকমা, উন্নয়ন কর্মী ও গবেষক তনয় দেওয়ান, সাংবাদিক হিমেল চাকমা, সৈকত রঞ্জন চৌধুরী, উদ্যোক্তা রোজিনা ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন