‘পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৪টি আদিবাসী জনগোষ্ঠী নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে’

 


পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক ভয়াবহ। পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৩ ভাষাভাষী ১৪টি আদিবাসী জনগোষ্ঠী আজ নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। পার্বত্যাঞ্চলের জুম্ম জনগণ একটা নিরাপত্তাহীন, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে বেঁচে আছে।

আজ শনিবার দুপুরে রাঙামাটিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী জুম্ম জনগণের সামগ্রিক পরিস্থিতি আলোকে সমাজের ভূমিকা প্রসঙ্গে সুধী সমাবেশ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সন্তু লারমা এসব কথা বলেন। রাঙামাটি শহরের নিউমার্কেট এলাকায় স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা আশিকা হলরুমে পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসী ফোরামের উদ্যোগে সভার আয়োজন করা হয়।

সন্তু লারমা বলেন, আসলে আদিবাসী কোনো জাতিগোষ্ঠীর নাম নয়, আদিবাসী হচ্ছে জনগোষ্ঠীর শব্দ। তাঁরা আদিবাসী, যাঁরা বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে জীবনধারণ করে। এই বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো আপনাদের জানা আছে।

যোগ করে তিনি আরও বলেন, শাসকগোষ্ঠী আদিবাসী শব্দটা ভয় পাচ্ছে। আদিবাসী শব্দ যদি জাতিসংঘের ঘোষিত নির্দেশ বা পরামর্শ অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার স্বীকার করে, তাহলে তাদের শব্দ মেনে নিয়ে অনুস্বাক্ষর করতে হবে। তাদের ভাবনা-দুর্ভাবনা হলো আদিবাসীদের জাতিসংঘের ঘোষিত অধিকারগুলো দিতে হবে।

সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তু লারমা বলেন, একটা গ্রাফিতি নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ৫১টি ভাষাভাষী আদিবাসী জাতির অস্তিত্ব এ দেশে অবাঞ্ছিত করা হয়েছে। কারণ, গ্রাফিতিতে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, মুসলিম এবং আদিবাসী লেখা রয়েছে। সেখান থেকে আদিবাসী পাতাটি ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশ যদি বহুজাতিক ও বহুসংস্কৃতির দেশ হয়ে থাকে, তাহলে শুধু এ দেশে বাঙালি জাতি বাস করে না। এ দেশে অন্তত ৫১টি আদিবাসী জাতি বসবাস করে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য অঞ্চল আদিবাসী ফোরামের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা। অন্যদের মধ্যে আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএস মং মারমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম আদিবাসী ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক অংচ মং মারমা, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মুধ মঙ্গল চাকমা, সাহিত্যিক শিশির চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সভাপতি থোয়াই অং মারমা, পার্বত্য অঞ্চল আদিবাসী ফোরামের ছাত্র ও যুববিষয়ক সম্পাদক লেলুং খুমি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

কোন মন্তব্য নেই

© all rights reserved - Janajatir Kantho