গ্রীষ্মের তাপদাহে পাহাড়ে সুপেয় পানির জন্য হাহাকার

পাহাড়ে পানির অভাব

গ্রীষ্মের তাপদাহে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির তীব্র সংকট। অনাবৃষ্টির ফলে পাহাড়ি ছড়াগুলো শুকিয়ে গেছে। পানির সংকটে হা-হুতাশ করছেন পার্বত্যবাসী।

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের চিম্বুক সড়কের গেৎশিমানী বম পাড়ার বাসিন্দারা চার ফুটের মতো মাটি খুঁড়ে সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করছেন। পাড়ার প্রায় ৮০টি পরিবার এ পানির উপর নির্ভরশীল। দৈনন্দিন নানা কাজের পাশাপাশি এ পানি পান করা হয়। একজনের পর আরেকজন সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করেন। কিন্তু এ পানি পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

তীব্র পানির সংকটে চিম্বুক পাহাড়ের কোরাং বাজার এলাকায় পানি বিতরণ করে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি। এ এলাকায় ম্রো জনজাতির ২১০টি পরিবারের বসবাস রয়েছে।

পানির জন্য হাহাকারের এ চিত্র কেবল বান্দরবানেই নয়। অনাবৃষ্টির ফলে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক ছড়া শুকিয়ে গেছে। উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের শিলছড়ি ছড়া, ভেলাপ্পা পাড়া ছড়া এবং ৩ নং চিৎমরম ইউনিয়ন ৩ নং ওয়ার্ডের জামাইছড়ি এলাকার ছড়াগুলো শুকিয়ে গেছে। ফলে সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন হাজারও এলাকাবাসী।

কিছু কিছু এলাকায় গভীর নলকুপ থাকলেও ছড়ায় পানি না থাকায় পানির স্তর নীচে নেমে গেছে। ফলে নলকূপেও পানি উঠছে না। এতে করে নদী হতে খাবার পানি এবং ব্যবহারের পানি সংগ্রহ করে এলাকাবাসীকে নিত্য প্রয়োজনীয় গৃহস্থালি কাজ সারতে হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, সাধারণত মার্চ থেকে জুনের আগপর্যন্ত ছড়াগুলোতে পানি থাকে না; থাকলেও অল্প। তবে চলতি বছরের অবস্থা ভয়াবহ। দাবদাহে ছড়াগুলো পুরোপুরি শুকিয়ে গেছে। এতে পাহাড় সুপেয় পানির সংকটে ভুগছে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে পানির জন্য এই হাহাকার নিয়ে পরিবেশকর্মীরা বলছেন, পাহাড়ে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন ও বন উজাড়ের কারণে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। যার কারণে পানির উৎসও কমে গেছে। এ ছাড়া পাহাড় থেকে পাথর তোলা ও পানির প্রাকৃতিক উৎসগুলো ধ্বংস করায় দুর্গম এলাকাগুলোতে পানির সংকট দেখা দিচ্ছে। 

কোন মন্তব্য নেই

© all rights reserved - Janajatir Kantho