‘শেরপুরে চিহ্নিত গোষ্ঠী আদিবাসীদের হামলা করে লুটপাট করছে’


বগুড়ার শেরপুরে কিছু চিহ্নিত গোষ্ঠী আদিবাসীদের উপর হামলা করে লুটপাট করছে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না। আদিবাসীদের জান মালের নিরাপত্তা দিতে স্থানীয় প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে শেরপুর উপজেলা আদিবাসী সমন্বয় কমিটি। আজ বুধবার সকালে পৌর শহরের পৌর শিশুপার্কে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ জানায়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমন্বয় কমিটির সভাপতি সন্তোষ সিং বাবু। তিনি বলেন, উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে আমরা আদিবাসীরা দেড়শ বছরের অধিক সময় ধরে বসবাস করছি। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কৃষি ও মজুর খেটে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু আপনারা লক্ষ্য করেছেন অনেক দিন ধরেই আমাদের উপর চিহ্নিত কিছু ব্যক্তি, গোষ্ঠী হামলা করে লুটপাট করছে।

২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত আদিবাসীদের ওপর ২০টির বেশি হামলার ঘটনা ঘটেছে। তাদের ঘরবাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, আবাদি জমি ও পুকুর দখল, শ্মশান ও কালী মন্দির ভাঙচুর এবং শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুকে গুরুতর আহত করার ঘটনা ঘটেছে। এসব নিয়ে এ পর্যন্ত শেরপুর থানা-পুলিশের কাছে অন্তত ২০টি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। শুধু তিনটি অভিযোগ এজাহার হিসেবে গ্রহণ করলেও পুলিশ কাউকে আটক করেনি।

একই ব্যক্তিরা গত ৬ মার্চ আদিবাসী নেতা ও ভবানীপুরের ইউপি সদস্য সন্তোষ কুমার সরকারের বাড়িতে প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে হামলা চালিয়ে ৯ বিষা পুকুরের মাছ লুটে নেয়। এ সময় স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েও পাওয়া যায়নি। একজন জনপ্রতিনিধি হয়েও দুই মাস ধরে তিনি ঘর ছাড়া। এর মধ্যেই গত ২ মে তার জমি থেকে সশস্ত্র অবস্থায় ধান কেটে নেওয়া হয়েছে। থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমাদের অভিযোগ গুলোতে কয়েকজন ব্যক্তির নাম বার বার উল্লেখ করা হচ্ছে কিন্তু তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে কয়েকটি দাবি জানানো হয়। দাবি সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- আদিবাসীদের উপর হামলা ও সম্পদ লুটপাটকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার কর, আদিবাসীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মালা প্রত্যাহার কর, জানমালের নিরাপত্তা দিতে হবে, ২০১৮ সালের গঠিত তদন্ত কমিটির চিহ্নিত খাস জমি, পুকুর ও দেবত্তোর সম্পত্তি আদিবাসীদের বন্দোবস্ত দিতে হবে।

দাবি আদায়ের জন্য আগামী ১৩ মে সোমবার সকাল ১১ টায় শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে উপজেলার আদিবাসীরা। 

কোন মন্তব্য নেই

© all rights reserved - Janajatir Kantho