বিহার কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, যারা এখানে ইফতার
নিতে আসেন তাদের অধিকাংশই দুস্থ নারী। এছাড়া অসহায় রোজাদারসহ রিকশাচালক ও দিনমজুররাও
আসেন ইফতার নিতে। মানুষকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে মানুষে-মানুষে বন্ধুত্ব ও প্রীতি বাড়বে।
একে-অপরের প্রতি শ্রদ্ধা বাড়বে। সামাজিক সম্প্রীতি বাড়ানোর জন্যই এই ইফতার বিতরণের
উদ্যোগ।
ইফতার বিতরণের এই উদ্যোগটি ২০১৩ সালে শুরু হয়। মাঝে
করোনা মহামারীর কারণে দুই বছর বন্ধ থাকার পর ২০২৩ সাল থেকে ফের চালু হয়।
এবারও পহেলা রোজা থেকেই সম্প্রীতির এই ইফতার
কর্মসূচি শুরু হয়। বিকেল চারটার দিকে ইফতার বিতরণ করা হলেও দুপু্র থেকেই ব্যস্ত
হয়ে পড়ে বৌদ্ধ মন্দিরের রান্নাঘর। যেখানে ইফতারির বিভিন্ন উপকরণ প্রস্তুত করা হয়।
প্রায় দুইশো মানুষের জন্য মন্দিরটিতে প্রতিদিন
ইফতার তৈরী হয়। যা দরিদ্র মুসলমানদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করেন মন্দির
কর্তৃপক্ষ।
সময়ের আগেই মন্দিরটির গেটে লাইন ধরেন নারী,
পুরুষ ও শিশুরা। সুশৃঙ্খলভাবে লাইন ধরে তারা ইফতার গ্রহণ করেন। ইফতারে ছোলা, মুড়ি,
বেগুনি, আলুরচপ, খেজুর, জিলাপি ও পেয়াজু দেওয়া হয়।
বৌদ্ধ মন্দিরে ইফতার নিতে আসা একজন নারী জানান,
আমরা দুঃখ কষ্টের জন্য এখানে-ওখানে কাজকর্ম করি। তারপরও আমাদের ঘরে ঠিকমতো পয়সা
আসে না।
আরেক নারী জানান, বাচ্চাদের খাওয়াই, নিজেরাও
খাই। খাওয়ার পর উপকার হয়। সওয়াব হয়, আমাদেরও সওয়াব হচ্ছে।
জানা গেছে, এই ইফতারের প্রচলন করেন শুদ্ধানন্দ
মহাথেরো। তাঁর প্রয়াণের পর বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ এই ধারা অব্যাহত রাখে। মূলত
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দাতারা এর অর্থের জোগান দেন।
বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি
বেদান্ত বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো বলেন, মানবতা এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার জন্য
আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখানে মুসলিম, হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান আমরা বিবেচনা করি
না। মানুষ হিসেবেই জানি। যারা দুস্থ, গরিব পবিত্র রমজান মাসে তাদের ইফতার দিই।
সবুজবাগে অবস্থিত বৌদ্ধ বিহারটি ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত
হয়। এখানে ২৮ জন আবাসিক বৌদ্ধ ভিক্ষু রয়েছেন। এছাড়াও ২৫০ জন এতিম শিশু বিহারটিতে
থেকে পড়াশোনা করছেন।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন