নেপালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য মাধ্যমিক পরীক্ষায়
অংশ নেননি থুইনুই। পরীক্ষার হলে বসতে না পারার আক্ষেপ ঘুচিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন হয়ে। বলেছেন,
‘ফাইনাল ম্যাচটা আসলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নেমেছিলাম। চিন্তাভাবনা
ছিল শিরোপা জিতে দেশে ফিরব। আসলে শেষ মুহূর্তে যখন বাঁশিটা দিল, তখন অনুভূতিটা ছিল
অন্যরকম। কারণ আমি এসএসসি পরীক্ষা দেইনি। দেশের হয়ে খেলবো বলে।’
‘যখন শেষ মুহূর্তের বাঁশিটা বাজলো তখন দেশের কথা, মা-বাবার কথাই সবচেয়ে
বেশি মনে পড়ছিল। আমি যে পরীক্ষাটা দিতে পারিনি, সেই আক্ষেপটাও ভুলে গিয়েছিলাম। মনে
হয়েছে সেটারই ফল পেয়ে গেছি। আফসোস হতো যদি চ্যাম্পিয়ন না হতাম। সেদিক থেকে এখন আর
কোনো আফসোস নেই, কারণ এসএসসি পরীক্ষা না দিলেও দেশকে কিছু একটা দিতে পেরেছি।’
পরিবার সম্পর্কে থুইনুই বলেছেন, ‘আমরা তিন বোন, দুই ভাই। আমার বাবা
কৃষিকাজ করেন, আর মা বাসায় কাজ করেন। আমার ভাই পড়ালেখা শেষ করেছে, তবে বাসাতেই থাকে।
আর বড় দিদির বিয়ে হয়েছে, তিনিও আমাদের সঙ্গেই থাকেন।’
ফুটবলার হওয়ার পেছনেও রয়েছে পরিবারের অবদান। এ নিয়ে থুইনুই জানান, ‘আমার
মা-বাবা আমাকে ছোটবেলা থেকেই উৎসাহ দিতেন খেলাধুলার প্রতি। আমাকে এমনও বলতেন যে, লোকে
যা বলে বলুক তাতে কিছুই যায় আসে না। মূলত ২০১৮ সাল থেকে আমার খেলাধুলা শুরু হয়।’
‘আমার মা-বাবার জন্য ভবিষ্যতে অনেককিছুই করতে চাই। নিজের স্বপ্নপূরণ
করতে চাই। এরমধ্যে একটা স্বপ্ন হচ্ছে নিজের মা-বাবাকে বড় একটি ঘর বানিয়ে দিতে চাই।
কারণ আমাদের ঘরটা তেমন ভালো নয়।’
সামনেই আসছে মারমাদের সবচেয়ে বড় উৎসব সাংগ্রাই। এ উপলক্ষে এখন থেকেই
প্রস্তুতি নিচ্ছেন থুইনুই। উৎসবমুখর এই সময়টাতে মা-বাবার সঙ্গে থাকতে চান সাফজয়ী এই পাহাড়ি কন্যা।
বাবা-মাকে বড় ঘর বানিয়ে দিতে চান সাফজয়ী থুইনুই
পার্বত্য জেলা রাঙামাটির মেয়ে থুইনুই মারমা। লাল-সবুজের জার্সি গায়ে
জড়িয়ে উঁচিয়ে ধরেছেন সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা।
ভুটান ও ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে টাইব্রেকারে জালে বল পাঠিয়েছিলেন এ কিশোরী। তবে
এখানেই থেমে যেতে চান না এই পাহাড়ি কন্যা। এগিয়ে যাওয়ার পথে স্বপ্নপূরণের সঙ্গে মা-বাবার
স্বপ্নটাও পূরণ করতে চান।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন