খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা, সাজেকসহ বিভিন্ন সড়কে সিএনজি
চালিয়ে তিনি সংসার চালান। তবে যাত্রাপথে কোন শিক্ষার্থীকে দেখলে বিনা ভাড়ায় তাদের গন্তব্যে
পৌঁছে দেন। কখনো স্কুলে যেতে, কখনো বা স্কুল থেকে বাড়ি ফিরতে। শুধু শিক্ষার্থী নয়,
যাদের অর্থ নেই তাদেরও গন্তব্যে পৌঁছে দেন।
ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত মুখ হয়ে
ওঠা সুসময় চাকমা নেটিজেনদের প্রশংসায় ভাসছেন।
সুসময় চাকমা বলেন, পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় শিক্ষার্থীরা
কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে হেঁটে পাহাড়, ছড়া পেরিয়ে মূল সড়কে আসে। তারপর আবার গাড়ির জন্য
অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। আর সব গাড়ি শিক্ষার্থীদের নিতেও চায় না। এসব দেখে আমার অনেক
মায়া হয়। তাই গাড়ি চালানোর সময় সড়কের পাশে স্কুলড্রেস পরা শিক্ষার্থী দেখলে আমি বিনা
ভাড়ায় তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিই।
স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সুসময়ের সংসার। বড়
ছেলে সৌম্মক সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে, ছোট মেয়ে ইয়ানার বয়স চার বছর।
স্নাতক সম্পন্ন করা সুসময় চাকমা ঢাকার একটি স্বনামধন্য
গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে সহকারী ব্যবস্থাপক পদে চাকরি করতেন। পরিবার নিয়ে ঢাকায়
থাকতেন। ২০২১ সালে বাবা ভুবন মোহন চাকমার মৃত্যুর পর মা নোনাভি চাকমা একা হয়ে যান।
সবশেষ ২০২২ সালে মায়ের জন্য ৭০ হাজার টাকা বেতনের
চাকরি ছেড়ে স্ত্রী সন্তান নিয়ে খাগড়াছড়িতে স্থায়ী হন। এরপরই তিনি সিএনজি চালিত
অটোরিকশা চালান।
সুসময়ের বিনা ভাড়ার সুবিধা কেবল শিক্ষার্থী নয়; পর্যটকসহ
সব পেশার মানুষ পেয়েছেন। প্রতি বছর বুদ্ধ পূর্ণিমার দিন তিনি বিনা ভাড়ায় সারাদিন গাড়ি
চালিয়ে থাকেন। সেদিন তার গাড়িতে যে যাত্রীরা ওঠেন, কারো কাছ থেকেই তিনি ভাড়া নেন না।
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন