পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের নামে ২ পাহাড়ি গ্রাম উচ্ছেদ বন্ধের দাবি

আদিবাসী গ্রামে পর্যটন কেন্দ্র

রাঙ্গামাটির জুড়াছড়ি ও বিলাইছড়ির সীমান্তবর্তী দুটি আদিবাসী গ্রামে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের নামে উচ্ছেদ বন্ধের দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের পক্ষে ছাত্র—যুব সংগঠনগুলো। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ), ঢাকার শাহবাগে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে জানানো হয়, পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের উদ্দেশ্যে জোর-জবরদস্তিমূলকভাবে গাছবাগান পাড়া ও থুমপাড়ার অধিবাসীদের উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দুটি গ্রামের জুম্ম অধিবাসীদের জীবিকার প্রধান অবলম্বন জুমচাষে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।

বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক অং শোয়ে সিং মারমা বলেন, সীমান্ত সড়কের পাশে পর্যটনের নামে দুটি পাহাড়ী গ্রামকে উচ্ছেদ করার জন্য সেনাবাহিনী পায়তারা চালাচ্ছে। পাহাড়ের মানুষের প্রধান জীবিকা জুম চাষ। এখন জুম চাষ, হলুদ চাষ, আদা চাষ যদি করতে না দেয়, তাহলে আদিবাসীদের জীবনমান কেমন হবে তা আপনারা ভাবুন।

এই ছাত্রনেতা আরো বলেন, আমরা কেউ উন্নয়ন বিরোধী নই, পর্যটনের বিরোধী নই। কিন্তু পর্যটনের নামে যদি আমাদের উচ্ছেদ করা হয়, আমরা সেই উন্নয়নের বিরোধী।

পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি জগদীশ চাকমা বলেন, পাহাড়ীদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করে উন্নয়ন করাকে আমরা উন্নয়ন হিসেবে দেখি না। ভুক্তভোগী পাহাড়ীদের গ্রেপ্তার করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

জাসদ ছাত্রলীগের সভাপতি গৌতম শীল বলেন, পাহাড়ী জনগোষ্ঠী হাজার বছর ধরে জুম চাষের উপর নির্ভরশীল। আর তা বন্ধ করার জন্য অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। একটি রাষ্ট্র যখন তার সকল জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে সমান চোখে দেখে না তা খুবই লজ্জাজনক। দুঃখ হলেও সত্যি যে আজকে সেনাবাহিনী উন্নয়নের নামে পাহাড়ীদের ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে। উন্নয়নের নামে কাউকে উচ্ছেদ করা যাবে না।

বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন বলেন, যেকোনো উন্নয়ন সেটা জনবান্ধব হতে হবে। সাজেকের লুসাইদের উচ্ছেদ করা হয়েছে, চিম্বুক পাহাড়ে ম্রোদের উচ্ছেদ করার প্রক্রিয়া করা হয়েছিল। আমরা তা বন্ধ করতে পেরেছি। একধরনের ব্যবসায়িক গোষ্ঠী লুট করে যাচ্ছে আর সরকার তা করার জন্য সহযোগিতা প্রদান করবে তা আমরা হতে দিব না।

সভাপতির বক্তব্যে তৌহিদুর রহমান তৌহিদ বলেন, পাহাড়ীদের উচ্ছেদ করার যে অভিযান চালানো হচ্ছে তা বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশের আদিবাসীদেরকে সমান অধিকার দিতে হবে।

সমাবেশ শেষে শাহবাগ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য পর্যন্ত প্রতিবাদকারীরা মিছিল করেন। 

কোন মন্তব্য নেই

© all rights reserved - Janajatir Kantho