স্টাফ রিপোর্টার: বান্দরবান চিম্বুকের নাইতং পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল ও পর্যটন স্থাপনা নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়ে লং মার্চ করেছে ম্রো জনগোষ্ঠী। আজ সকাল ১০টায় চিম্বুক থেকে বান্দরবান জেলা সদর অভিমুখে আন্দোলনকারীরা মার্চ করে।
এই কর্মসূচিতে ম্রো জনগোষ্ঠীর মানুষ ছাড়াও বিভিন্ন গোষ্ঠী শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নিয়েছে। কর্মসূচির মাঝে পুলিশ বাধাঁ দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে আন্দোলনকারীরা। তবে পুলিশী বাধাঁ পেরিয়ে লংমার্চ এগিয়ে গেছে।
আন্দোলনকারীরা ‘আমার ভূমি, আমার মা’, ‘আমাদের ভূমি, আমাদের অধিকার, তোমাদের নয়’, ‘তোমাদের পর্যটন ব্যবসা, আমাদের মরণ দশা’, ‘পর্যটন নয়, শিক্ষা চাই’, ‘আমাদের জীবিকার উৎসে অন্যায় হস্তক্ষেপ বন্ধ কর’ ইত্যাদি লেখা ফেস্টুন নিয়ে লং মার্চে অংশ নেয়।

লং মার্চে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সংহতি জানায়। লংমার্চকারীদের লাইম পাড়া, শ্যারন পাড়া ও গেৎশিমানী পাড়ার বম জনগোষ্ঠী পানি ও শুকনো খাবার দিয়ে সহযোগিতা করে।
দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার পদযাত্রা শেষে লং মার্চকারীরা জেলা শহরের রাজার মাঠে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে তাঁরা আগামী দশ দিনের মধ্যে হোটেল ও বিনোদন পার্ক নির্মাণ বন্ধের দাবি জানান। দাবি মানা না হলে আগামী দিনে বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করার ঘোষণাও দেয়া হয়। তবে কী কর্মসূচি সেটি তারা বলেননি।
এদিকে পর্যটন স্থাপনার অপরসঙ্গী ম্যারিয়েট হোটেল এণ্ড রিসোর্টস স্থানীয় ম্রো জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রেক্ষাপটে জাতীয় আন্তর্জাতিক সংগঠনের চাপে তাদের অবস্থান পরিস্কার করেছে। ম্যারিয়েটের বক্তব্য অনুযায়ী তাদের সম্মতি ছাড়াই এবং কোন ধরণের চুক্তি ব্যতিরেকে সিকদার গ্রুপ তাদের নাম, ব্যান্ড/ব্যান্ডিং লগো ব্যবহার করেছে। তাঁরা বেআইনীভাবে দখলকৃত জমি এবং এর দ্বারা কোন জনগোষ্ঠীর বা ব্যক্তির মানবাধিকার লঙ্ঘনের সম্ভাবনার বিষয়ে অবগত নন বলেও জানিয়েছেন।
চিম্বুকের পাহাড়ে ১ হাজার একর জুম জমি দখলে নিয়ে হোটেল ও পর্যটন হলে ৭০ থেকে ১১৬টি ম্রো পাড়া সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হবে আদিবাসীদের আশঙ্কা। পাড়াগুলোর মধ্যে ১০ হাজারের মতো জুমচাষির উদ্বাস্তু হওয়ার শঙ্কা তৈরি হবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সিকদার গ্রুপ সেনা কল্যাণ ট্রাস্টকে সঙ্গে নিয়ে হোটেল ম্যারিয়েট ও পর্যটন স্থাপনার নির্মাণ কার্যক্রম কেন চালিয়ে যাচ্ছে প্রশ্ন আদিবাসীদের।