স্টাফ রিপোর্টার: বান্দরবানের চিম্বুকে হোটেল ও পর্যটন স্থাপনা নির্মাণের পক্ষে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বেলা ১২টায় জেলা শহরে ‘বান্দরবানের ম্রো সম্প্রদায়ের’ ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়।
এরআগে গত ৮ নভেম্বর নাইতং পাহাড়ে পাঁচ তারকা হোটেল ও পর্যটন স্থাপনা নির্মাণের প্রতিবাদে চিম্বুকের কয়েক হাজার ম্রো রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায়। এই পর্যটন ও পাঁচ তারকা হোটেলের ফলে ৭০ থেকে ১১৬টি পাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে ম্রো জনগোষ্ঠীর আশঙ্কা। পাড়াগুলোর মধ্যে ১০ হাজারের মতো জুমচাষি উদ্বাস্তু হওয়ার শঙ্কা তৈরি হবে।
প্রতিবাদ শঙ্কার মাঝেই আজ শিকদার গ্রুপ এবং রাষ্টীয় মদদে জেলা পরিষদ সদস্য সিংইয়ং ম্রো, স্থানীয় ম্রো নেতা ইয়ুংলক, মেনদং কমান্ডারের নেতৃত্বে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ ছাড়া আলীকদম থেকে নিরীহ আদিবাসীদের এনে পাল্টা মানববন্ধন করেছে বলে অভিযোগ আদিবাসীদের।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ম্রো ছাত্রনেতা রেং ইয়ং ম্রো বলেন, ‘আলীকদম থেকে নানা ধরণের চাপ, হুমকি ধামকি দিয়ে নিরীহ আদিবাসীদের জড়ো করা হয়েছে। আমরা জেনেছি তিনটা বাসে করে তাদের বান্দরবানে নিয়ে বসিয়ে দিয়েছে। যারা প্রোগ্রামে অংশ নিয়েছেন তাদের অনেকে জানেনই না কেন এসেছেন।’
রেং ইয়ং আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, যারা অংশ নিয়েছেন তাদেরকে কথা বলবার ভাল সুযোগ দেওয়া হলে তারা বলতে পারবেন। এটা করা হয়েছে ম্রোদের ভূমির ওপর ম্যারিয়ট হোটেল স্থাপন করে ভূমি দখলকে বৈধতা দেবার জন্য। এইরকম নীচ প্রকৃতির ষড়যন্ত্র আমরা নিরাপত্তা বাহিনির কাছে আশা করি না।’
হোটেল নির্মাণের পক্ষের পাল্টা এই কর্মসূচি রাষ্ট্রীয় বিশেষ গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র বলে সরাসরি তোপ দাগলেন লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট পাইচিং মং মারমা। তিনি বলেন, ‘নিজেদের ইমেজ পরিস্কার করতে আর জল ঘোলা করতে এই আয়োজন। সব খরচ, সব আয়োজন আর্মিরা করছে। আলিকদম থেকে শ’ খানেক আদিবাসী যোগার করা হয়েছে। এটা একটা পাল্টা শো ডাউন। দেদারছে পয়সা ছিটানো হইছে, পরিবহনের ব্যবস্থা, লিফলেট বিলি সহ পাল্টা শো ডাউনের নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। নাটকের স্ক্রিপ্ট দুর্বল।’
পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা নিপন ত্রিপুরা বলেন, ‘ভূমি থেকে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে সাধারণ ম্রোদের আন্দোলনকে বাধাগ্রস্থ করতেই এই মানববন্ধন। আমরা পিসিপি এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
এসবের ফলে পাহাড়ে পর্যটনের নামে ভূমি দখলকে উস্কে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এই ছাত্রনেতা।
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা পরিষদের সদস্য সিংইয়ং ম্রোর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।