নগর প্রতিবেদক, ঢাকা: পাহাড় থেকে কাঁচা সোনা বের করে আনার পর তা যেমন আগুনে পুড়ে খাঁটি করতে হয় তেমনি একটি জনগোষ্ঠীর সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে হলে দরকার সমালোচনা। সমালোচনা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে। গারো সাহিত্যের সমালোচনা দরকার; দরকার শিশু-কিশোর সাহিত্য।
বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারী), সন্ধ্যায় রাজধানীর শিশু মালঞ্চ স্কুল মাঠে অনুষ্ঠেয় গারো বইমেলার লেখক আড্ডায় এসব কথা বলেন জনজাতির কন্ঠের সম্পাদক উন্নয়ন ডি. শিরা।
থকবিরিম আয়োজিত লেখক আড্ডায় তরুণ এই লেখক আরও বলেন, ‘আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষৎ কিন্তু চলতি গারো বইমেলায় শিশু-কিশোরদের জন্য তেমন উল্লেখযোগ্য বই নেই। গারো লেখকদের উচিত শিশু-কিশোর সাহিত্য নিয়ে কাজ করা।’
মেলায় তরুণ কবি নিগূঢ় ম্রং’য়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বহিঃপ্রকাশ’ প্রকাশিত হয়েছে। এই বই প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, ‘প্রথমদিকে বইটি পড়ে মনে হবে লেখক নির্ঘাত প্রেমে ব্যর্থ হয়ে কবিতা গুলো লিখেছেন। কিন্তু যেই পৃষ্ঠা উল্টাতে থাকবেন অমনি অন্য চিত্র ধরা পড়বে। ক্রমাগত পরের কবিতাগুলোতে সমাজ, রাষ্ট্র চেতনা, আদিবাসী শোষণ-নিপীড়নের উপাখ্যান ধরা দিয়েছে। এটি মান্দি সাহিত্যে ব্যতিক্রমী কাব্যগ্রন্থ।’
এখন পর্যন্ত মেলায় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল ম্রং লিখিত ‘গারো পারিবারিক আইন’ বইটি পাঠক চাহিদার শীর্ষে অবস্থান করছে। কেন এই বইয়ের এতো চাহিদা প্রশ্নের জবাবে জনজাতির কন্ঠের সম্পাদক বলেন, ‘গারো সমাজ যে নিয়ম বা প্রথা দ্বারা চালিত সেগুলো এখন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে, বিশেষ করে সম্পত্তির উত্তরাধিকার নিয়ে একটি তর্ক আছে। নতুন প্রজন্মের কাছে গারো কাস্টমস অজানা, বাস্তবতার নিরিখেই সেগুলো জানতে হচ্ছে। ওই রীতি রেওয়াজ গুলো জানাতে এই বই সহায়তা করছে।’
উল্লেখ্য, প্রকাশনী সংস্থা থকবিরিমের একক আয়োজনে রাজধানীর গুলশানের শিশু মালঞ্চ স্কুল মাঠে মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত হচ্ছে গারো বইমেলা। ফেব্রুয়ারী মাস জুড়ে এ মেলা থাকবে। বিকেল ৪টা থেকে ৯টা পর্যন্ত চলা গারো বইমেলা সবার জন্য উন্মুক্ত।