সুমনা চিসিম
লিরা জেলা শহর। তা সত্ত্বেও এখানকার মার্কেট বা বাজার জেলা শহরের মত নয়। মার্কেট গুলো এমনই হয়তো। আমার কাছে আমাদের দেশের উপজেলার বাজারের মতই ঠেকে। মানুষজন কম এই যা! হালকা পাতলা। ঝুট ঝামেলা, ঠেলাঠেলি বা ধাক্কাধাক্কি নেই। শান্তি মতো ঘুরা যায়। জিনিসপত্র আরাম আয়েশে দেখে পছন্দ করা সহজ।
আজকে আমাদের সাথে যোগ দিয়েছে মে। আশিক ভাই ও নোয়েল সব সময়ই সাথে থাকে। অন্যান্যদের সাথেও ঘুরাঘুরি হয়। আমরা এ দোকান সে দোকান ঘুরে ঘুরে দেখছি। জিনিস পত্রের দামও দেখি অনেক বেশি। হাজারের কমে নেই। আমি মনে মনে বিড়বিড় করছি। আর আওড়াচ্ছি, চিন্তা কিসের! হাতে নগদ ৪ লাখ ৫১/৫৩ হাজার শিলিং থাকতে! প্রথম দিনেই স্ট্রমী ফাউন্ডেশন থেকে সন্মাননা হিসেবে পেয়েছি এ টাকা। কল্পনায় ছিলনা এতো টাকা একসাথে পাবো। খুশি না হয়ে থাকা যায়? অনেক কিছু কিনবো বলেও স্থির করে রেখেছি। কামপালায় গিয়ে তবে কিনবো। লিরায় এত কিছু কেনার ইচ্ছা নেই। এখান থেকে বয়ে নিতে হবে। ট্র্যাডিশন আনকমন কিছু যদি চোখে পড়ে। কিনবো।
এসব ভাবছি আর ভাবছি। এদিকে মে তার প্রয়োজনীয় টুকিটাকি কিনলো। তাই আমিও কোন কিছু কেনার চিন্তা না করে ঝটপট কাপড় কাঁচার সাবান কিনতে উঠেপড়ে গেলাম। দাম চাইলো ১২ হাজার শিলিং। দশটা না পাঁচটা না, স্রেফ একটা মাত্র সাবান। একটা সাবানের দাম ১২ হাজার! তা-ও আবার কাপড় কাঁচার। ভাবা যায়! কি আর করা। কাপড় জমা হয়ে আছে। জরুরী বলে শেষমেষ কিনলাম।
আসল কথা ওদের টাকার মান আমাদের থেকে কম। ১ টাকায় ৩০.৬০ শিলিং। আমাদের ১০০টাকা দিলে ওদের ৩০০০ শিলিং গুনতে হয়। এটা ২০১২ সালের কথা। বর্তমানে ১ টাকায় ৪৫ শিলিং।
সে যাই হোক, আশে পাশে ফুটপাতে ঝাড়ুসহ ফলমূল, নানান খাবার ও অন্যান্য বেচাকেনা দেখলাম। শুধু দেখলাম। কিছু কেনার সাহস আর দেখালাম না। সেদিনের মত বার হাজারের সাবান নিয়ে ফিরলাম।
(চলবে)