শিক্ষা ও সমাজ সেবায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘মাদার তেরেসা গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ সম্মাননা পেলেন বৌদ্ধ সন্ন্যাসী ভেন. প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো। শনিবার রাজধানীর পল্টন টাওয়ার ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম মিলনায়তনে মাদার তেরেসার ১১৫ তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভায় ‘মাদার তেরেসা রিসার্চ ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল’ তাকে এ সম্মাননা প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শিকদার মকবুল হক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব পীরজাদা শহিদুল হারুন এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব ড. মোহাম্মদ জকরিয়া এ সম্মাননা তুলে দেন।
শিক্ষার প্রসার ও সমাজ সংস্কারে নিবেদিত প্রাণ ভেন. প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরোর জন্ম ১৯৪৭ সালে, খাগড়াছড়ি জেলার দিঘীনালা উপজেলার বাবুছড়া গ্রামে। তার পারিবারিক নাম বলেন্দ্র দেব চাকমা। মা ইন্দ্রপুডি চাকমা এবং বাবা নরেন্দ্র লাল চাকমা।
প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো শৈশবকাল থেকেই নিদারুণ অভাবের সাথে লড়াই করে পার্বত্য চট্রল বৌদ্ধ অনাথ আশ্রমে আসেন ১৯৬৬ সালে। মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৯৬৮ সালে; ঐ বছরই ভিক্ষুত্বে দীক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৭২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক, ১৯৭৭ সালে চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে বিএ অনার্স, ১৯৭৮ সালে এমএ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পালি সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন ১৯৮০ সালে।
ঐতিহ্যবাহী ‘পার্বত্য চট্টল বৌদ্ধ অনাথ আশ্রম’ এর কার্যকরী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন ১৯৭৪ সালে। সমমনা পাঁচ জন ভিক্ষু মিলে রাঙ্গামাটির রাঙ্গাপানি ও ভেদভেদী গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে প্রতিষ্ঠা করেন ‘রাঙ্গাপানি মিলন বিহার’। এখানেই স্থাপন করেন পার্বত্য চট্টল বৌদ্ধ অনাথ আশ্রমের শাখা কার্যালয় যাকে ঘিরে রচিত হয় স্বপ্নের ঠিকানা ‘মোনঘর’। একে একে প্রতিষ্ঠা করেন অনাথ আশ্রম আবাসিক উচ্চ বিদ্যালয়, ধর্মোদয় পালি কলেজ, মোনঘর শিশু সদন, মোনঘর আবাসিক বিদ্যালয়, মোনঘর পালি কলেজ। ভেন. প্রজ্ঞানন্দ মহাথেরো মোনঘরের কার্যনির্বাহী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পদে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘ ৩৪ বছর। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকার শাক্যমুনি বৌদ্ধ বিহার কমপ্লেক্সে প্রতিষ্ঠা করেন ‘বনফুল শিশু সদন’। ২০০৪ সালে শিশু সদনের বর্ধিত রূপ হিসেবে গড়ে তোলেন ‘বনফুল আদিবাসী গ্রীনহার্ট কলেজ’।